চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের উত্তর সরেঙ্গা গ্রামের প্রধান সড়ক দুই বছর ধরে খুঁড়ে ফেলে রাখার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকাবাসী। ঠিকাদারের অবহেলায় জলাবদ্ধতা, কাদা আর দুর্ভোগে অতিষ্ঠ হয়ে এবার অভিনব প্রতিবাদে নেমেছেন তারা।
শনিবার (২৩ জুন) দুপুরে হাটুপানি জমে থাকা সড়কে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ধানের চারা রোপণ করেন স্থানীয়রা।
দুই মাস আগে (২২শে জুন) সময়ের কন্ঠস্বরে ‘আনোয়ারায় রাস্তা খুঁড়ে দুই বছর পার ঠিকাদারের, জনভোগান্তি চরমে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসন বা ঠিকাদার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আজও একই দুর্দশা, বর্ষার পানি জমে হাটুপানি পার হয়ে চলতে হচ্ছে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে স্থানীয় ঠিকাদার মো. ইব্রাহিম ১ কোটি ২৩ লাখ টাকার বরাদ্দে ২ হাজার ৮৮ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়ক উন্নয়ন কাজের টেন্ডার পান। কাজ শুরু করলেও মাত্র ৮৫০ মিটার সম্পন্ন করে বাকি ১ হাজার ২৩৮ মিটার খুঁড়ে ফেলে রেখেছেন। নানা অজুহাতে দুই বছরেও কাজ সম্পন্ন হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘চুন্নাপাড়া ও সরেঙ্গা গ্রামের প্রধান সড়ক এটি। খননের কারণে দুই বছর ধরে যানবাহন বন্ধ, মানুষ হাটুপানি মাড়িয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। ঠিকাদারকে তাগাদা দিলে ক্ষমতা দেখায়।’
অনেকের অভিযোগ, ঠিকাদার রাজনৈতিক পরিচয়ে উপজেলা যুবলীগ নেতা হওয়ায় কেউ তখন মুখ খুলতে পারেনি। সরকার পরিবর্তনের পরও সড়কটি তার অবস্থায় পড়ে আছে। শিক্ষার্থী, রোগী, নারী, বৃদ্ধ – সবার জন্য এই সড়ক এখন দুঃস্বপ্ন।
রায়পুর ইউনিয়ন জামায়াত সভাপতি হারুন ইবনে গণি বলেন, ‘এলাকার জনদুর্ভোগ চরমে। দ্রুত কাজ না ধরলে আমরা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চাইব।’
অন্যদিকে, ঠিকাদার মো. ইব্রাহিম সব দায় এড়িয়ে জানিয়েছেন, ‘বৃষ্টির কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। খুব শীঘ্রই কাজ ধরব।’
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার ‘সময়ের কন্ঠস্বর’-কে জানিয়েছেন, ‘আগের ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল এলজিইডি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’
এনআই