ভেনেজুয়েলা উপকূলে বিশাল তেলবাহী ট্যাংকার আটক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একথা জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের সঙ্গে ওয়াশিংটনের উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল। মূলত মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ানোর ধারাবাহিক পদক্ষেপের সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ড
হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি ট্যাংকার আটক করেছি— খুব বড় ট্যাংকার। এখন পর্যন্ত আটক করা ট্যাংকারগুলোর মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়’। তিনি আরও বলেন, ‘আরও কিছু ঘটনা ঘটছে’, তবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি। ট্রাম্প বলেন, পরে তিনি এ নিয়ে কথা বলবেন।
এদিকে এ বিষয়ে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, মার্কিন কোস্ট গার্ড এই অভিযান পরিচালনা করেছে এবং নৌবাহিনী এতে সহায়তা দিয়েছে। মাদুরোর ওপর চাপ বাড়ানোর সর্বশেষ পদক্ষেপ এটি। যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর বিরুদ্ধে নারকো-টেররিজমের অভিযোগ এনেছে।
এই ঘটনার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর দুটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমান ভেনেজুয়েলা উপসাগরের আকাশে দীর্ঘ সময় টহল দেয়। ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পর কোনও মার্কিন যুদ্ধবিমানের এটাই ভেনেজুয়েলার আকাশসীমার এতটা কাছাকাছি উড়ে যাওয়ার ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
ফ্লাইট-ট্র্যাকিং সাইটগুলো দেখায়, যুদ্ধবিমান দুটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় থেকেই ভেনেজুয়েলা সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে উড়েছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক দশকের মধ্যে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি গড়ে তুলেছে। পাশাপাশি ক্যারিবিয়ান সাগর ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক পাচারকারী সন্দেহে ধারাবাহিকভাবে নৌকায় প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে।
ট্রাম্প বারবার বলেছেন, মাদক ঠেকাতে স্থল অভিযানের ঘোষণা “শিগগিরই” দেয়া হবে। তবে কোথায় বা কখন এই অভিযান চালানো হবে— সে বিষয়ে তিনি কোনও তথ্য দেননি।
সংবাদমাধ্যম বলছে, ওয়াশিংটন ও কারাকাসের অতীতে আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের তেল কোম্পানি শেভরনকে ভেনেজুয়েলায় তেল উত্তোলন ও রপ্তানি করার অনুমতি দিয়েছিল। আর এটি মাদুরো সরকারের জন্য ছিল বড় আর্থিক সহায়তা। তবে সর্বশেষ ট্যাংকার আটক করার ঘটনা কারাকাসের প্রতি ওয়াশিংটনের কঠোরতা আবারও বাড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
অবশ্য ট্যাংকার আটকের বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে ভেনেজুয়েলা সরকার এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।