গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা থেকে ময়মনসিংহ বিদ্যুৎকেন্দ্র পর্যন্ত স্থাপিত গ্যাস সঞ্চালন লাইনের ভূমি অধিগ্রহণে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাঠুলি মৌজায়।
ভুক্তভোগী মোছা. মিনারা খাতুনের ছেলে রিটন অভিযোগ করে বলেন, গ্যাস লাইনের নির্ধারিত রুট কাঠুলি মৌজার বি.আর.এস ১০৬৩ নম্বর খতিয়ানের ৬২৫২ ও ৬২৫৩ নম্বর দাগের ওপর দিয়ে গেছে। ওই দাগে তার মালিকানাধীন অবকাঠামো রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫০ ফুট লম্বা ও ১৩ ফুট প্রশস্ত একটি আধাপাকা দালানঘর, ৩০০ ফুট গভীর বোরিং মোটর এবং আড়াই ইঞ্চি ডেলিভারি লাইন। এসব স্থাপনা সরাসরি গ্যাস লাইনের আওতায় পড়েছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, এনামুল হক গং তাদের মালিকানাধীন একটি পোল্ট্রি ঘরকে গ্যাস লাইনের আওতাভুক্ত দেখাতে স্থানীয় এক আমিনের সঙ্গে যোগসাজশ করেন। অথচ তাদের পোল্ট্রি ঘরটি কাঠুলি মৌজার ৪৪ নম্বর খতিয়ানের ৬৩১২ নম্বর দাগে অবস্থিত এবং গ্যাস লাইনের রুট থেকে প্রায় ১০০ ফুট দূরে। এনামুল হকের বাড়ি শ্রীপুর উপজেলায়; তিনি কাঠুলি মৌজার বাসিন্দা নন।
ভুক্তভোগীর দাবি, ফিল্ড বুক প্রস্তুতের সময় প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ৬২৫৩ নম্বর দাগে অস্তিত্বহীন পোল্ট্রি ঘরের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। পরবর্তীতে অধিগ্রহণ নোটিশে তার জমির দাগ ও খতিয়ান উল্লেখ থাকলেও ৩ নম্বর এওয়ার্ডে এনামুল হক গংদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে প্রকৃত মালিক হিসেবে তিনি ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হন।
এ বিষয়ে তিনি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে ক্ষতিপূরণের বিল স্থগিত এবং ভুল এওয়ার্ড সংশোধনের জন্য দরখাস্ত ও মিস কেস দায়েরের পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী তিনি এল.এ কেস নম্বর ০৯/২০২২–২০২৩-এর আওতায় বিল স্থগিতের আবেদন করেন এবং তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত মালিকের নাম অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মিস কেস দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী আরও অভিযোগ করেন, মাঠ পর্যায়ের তদন্তে তার বোরিং মোটর ও অন্যান্য অবকাঠামো সরেজমিনে বিদ্যমান থাকলেও তা ফিল্ড বুকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এ বিষয়ে তিনি লিখিত আবেদনে ৩ নম্বর এওয়ার্ডে ভুলভাবে পোল্ট্রি ঘরের পরিবর্তে দালানবাড়ি লিপিবদ্ধ করা এবং অবকাঠামোর ক্ষেত্রে অন্যদের নাম বাদ দিয়ে তার নাম এওয়ার্ড বহিতে অন্তর্ভুক্ত করে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত এনামুল হক গংদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সার্ভেয়ার ফিরোজ জানান, “যখন আমরা কাজ করেছি, তখন অভিযোগকারীদের জানিয়েছি; কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেননি।”
এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি উঠেছে।
এনআই