ঘনকুয়াশায় চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে দুই যাত্রীবাহী লঞ্চে সংঘর্ষের ঘটনায় এক নারীসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের ভোলার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহতরা হলেন- ভোলার লালমোহন উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকার সিরাজুল ব্যাপারীর ছেলে আবদুল গনি (৩৮), একই এলাকার কালু খাঁর ছেলে মো. সাজু (৪৫), চর উমেদ ইউনিয়নের কচুখালী গ্রামের গার্মেন্টস কর্মী রিনা বেগম এবং চরফ্যাশন উপজেলার আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ফরিদাবাদ গ্রামের মো. গেদু শনির ছেলে মো. হানিফ মাঝি (৪২)।
জানা গেছে , চরফ্যাশনের ঘোষের হাট থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য ছেড়ে যায় এমভি জাকির সম্রাট -৩ লঞ্চটি। রাত ২টার দিকে লঞ্চটি চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী লঞ্চ এমভি অ্যাডভেঞ্চার-৯ জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চের মাঝ বরাবর সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে জাকির সম্রাট-৩ লঞ্চটির দ্বিতীয় তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবং ঘটনাস্থলেই ৪ জনের মৃত্যু হয়। এসময় বেশ কিছু যাত্রী আহত হয়েছেন।
নিহত গনি মিয়ার স্ত্রী লাইজু বেগম বলেন, কাজের উদ্দেশ্য গতকাল সন্ধ্যায় বাসা থেকে ঢাকার পথে যাত্রা করেন গনি মিয়া। তাকে ঢাকা যাওয়ার জন্য নিষেধ করলেও তিনি না শুনে ঢাকার উদ্দেশ্য চলে যান। পরে রাতে স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ শুনতে পান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে আহাজারি করছেন তিনি। গণি মিয়া ৩ সন্তানের জনক ছিলেন।
গার্মেন্টস কর্মী রিনার পরিবার জানায়, একমাত্র সন্তানকে নানা নানুর কাছে রেখে স্বামী হোসেনকে নিয়ে ৮ বছর আগে ঢাকায় আসেন রিনা বেগম। এরপর রিনা গার্মেন্টেসে আর স্বামী হোসেন রাজমিস্ত্রী কাজ নেন। গেল কয়েকদিন আগে শীতে ভোলায় বেড়াতে এসে গতকাল পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্য রওয়ানা করেন স্বামী স্ত্রী। যাওয়ার সময় আবার রোজার ঈদে বাড়ি ফিরবেন বলে রিনার বাবা মা ও সন্তানকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাতেই রিনার ভয়াবহ মৃত্যু আর হোসেনের আহত হওয়ার সংবাদ পান।
এছাড়া নিহত হানিফ মাঝি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন। রাতে তার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মেয়ে আকলিমা বেগম ও ছেলে শামিম হোসেন। অভাবের সংসারে বাবা হানিফ মাঝিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনকারী ব্যাক্তি।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ঘটনাটি শুনেছি। লাশ ঢাকায় রয়েছে। লাশ ভোলায় পৌঁছালে পুলিশের টিম পাঠানো হবে।
এফএস