শীতের তীব্রতা যমুনা বিধৌত সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষকে বিপাকে ফেলেছে। দিন দিন শীত ক্রমে তীব্র হয়ে উঠছে। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা এবং সন্ধ্যার পর হিমেল বাতাস ও কুয়াশার কারণে জনজীবন চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায়, বিশেষ করে দিনমজুর, ভ্যানচালক ও নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় উপজেলার উমারপুর ও ঘোড়জান ইউনিয়নের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ।
সরেজমিনে রাস্তায় দেখা গেছে, সকালের দিকে কুয়াশার কারণে যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। দৈনন্দিন খেটে খাওয়া দিনমজুর ও কর্মজীবী মানুষরা অতিরিক্ত কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে সময়মতো বাইরে বের হতে পারছে না। এদিকে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে জ্বর, সর্দি, কাশিসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের প্রবণতা বেড়েছে।
কুয়াশা ও অতিরিক্ত শীতের প্রভাব পড়েছে কৃষিজমিতেও। কুয়াশার কারণে রবিশস্যের জমিতে ছত্রাক ও বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা নিয়ে কৃষকরা উদ্বিগ্ন। কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
উপজেলার খাষকাউলিয়া পশ্চিম জোতপাড়া গ্রামে দেখা গেছে, পরিবারের সদস্যরা ঘরের ভেতরে আগুন পোহাতে বসেছেন।
জামাল সিকদার বলেন, ‘এই কনকনে শীতে আগুনের পাশে না থাকলে শরীর টেকে না। ঠান্ডা সহ্য করা কঠিন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শীত লেগেই থাকে। আগুন পোহানোই এখন একমাত্র ভরসা, তবে জীবন তো থেমে থাকে না। শিশু ও বয়স্ক মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি।’
এলাকার সুধীজনরা বলেন, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য সরকারি, বেসরকারি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শীত নিবারণমূলক বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে।
হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে। শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও রোগীর সংখ্যা স্বাভাবিক। তবে শীতজনিত রোগ থেকে বাঁচতে বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।
গ্রামাঞ্চলে ঘরের ভেতরে ও বাইরে খড় জ্বালিয়ে উত্তাপ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, ‘এর ফলে ধোঁয়ার কারণে শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। শিশুদের গরম কাপড় পরিধান করিয়ে ঠান্ডা থেকে নিরাপদে রাখা উচিত।
এসআর