পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ঈদের দিন নিজ বাড়ি থেকে শাহনাজ নামে এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছিল পরকীয়া সম্পর্ক চালিয়ে যেতে সম্মতি না জানানোয় শাহনাজকে হত্যা করা হয়। তবে শাহনাজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। থানায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে মামলা করলেও আদালতে তাকেই আসামী করে মামলা করেছেন নিহতের নানা খোরশেদ আলম।
ঘটনার পর হত্যার জন্য প্রতিবেশী রাজু নামে এক ব্যক্তির নাম সামনে আসে। বাড়ির পাশে খেলতে থাকা শাহনাজের সাত বছরের মেয়ে একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। রাজুর সাথে এক সময় শাহনাজের প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন শাহনাজ। আর এতেই ক্ষিপ্ত ছিলেন রাজু, এমনটাই বলেছেন শাহনাজের শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।
ঘটনার পরদিন (১২ এপ্রিল) শাহনাজের স্বামী আব্দুল মজিদ বাদী হয়ে রাজু মিয়াকে আসামী করে দেবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে উলটো অভিযোগ করেন শাহনাজের মা রওশনারা বেগম ও নানা খোরশেদ আলম। তারা অভিযোগ করেন শাহনাজকে তার স্বামী শারীরিক নির্যাতন করতেন। এই নিয়ে শাহনাজ তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাও করেছিলেন। আগামী ২৫ এপ্রিল সেই মামলার শুনানি রয়েছে।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) খোরশেদ আলম বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ আমলী আদালত-২ এ আব্দুল মজিদকে প্রধান আসামী করে আটজনের নামে মামলা দায়ের করেন।
খোরশেদ আলম বলেন, আমার নাতনিকে অন্য কেউ না বরং মজিদ ও তার পরিবারের লোকেরা মিলে হত্যা করেছে। ঘটনার দিন (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দেবীগঞ্জ থানায় এজাহার জমা দিতে গেলে তা গ্রহণ করা হয়নি। ডিউটি অফিসার, এসআই এরশাদুল ও এসআই কামাল দুর্ব্যবহার করে বের করে দিয়েছিলেন আমাকে।
তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যায় (১১ এপ্রিল) আমাকে বলা হয়েছিল মামলা হয়ে গেছে আর মামলা হবে না। মামলা করতে হলে কোর্টে করেন। অথচ পরে মামলার কাগজ পেয়ে দেখি মামলা হয়েছে ১২ তারিখ। থানা এমন মিথ্যা কথ্যা না বললেও পারতো। জামাই মারা যাওয়ার পর নাতনিকে আমি লালনপালন করে বিয়ে দিয়েছি। সেই নাতনিকে জবাই করে মারলো তারা। আমি এর ন্যায্য বিচার চাই।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) নজরুল ইসলাম বলেন, সেদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্ত করেই মামলা নেয়া হয়েছে। মামলায় যেই অপরাধী হোক পূর্ণঙ্গ তদন্তে তা নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে। নিহতের পরিবারের কারো সাথে অপেশাদার আচরণ কেন করবো আমরা?
এমআর