বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় আবারও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। গরুতে ফসল নষ্ট করার বিরোধ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশের জেরে ওই দুই সাংবাদিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২ মে) মামলার আইনজীবী ও বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সায়েম-উল-আলম সাইবার আদালতে মামলাটি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের পাথরঘাটা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল দেশ দর্পণের সাংবাদিক মো. জিয়াউল ইসলাম, আরটিভির পাথরঘাটা প্রতিনিধি তাওহীদুল ইসলাম এবং স্থানীয় হাড়িটানা গ্রামের বাসিন্দা হানিফা, পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৪ ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুজন খান ও তাঁর স্ত্রী ফাহিমা বেগম।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি অনলাইন নিউজ পোর্টাল দেশ দর্পণে ‘খেতেই চাচা ভাতিজার ধমকা–ধমকি’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করেন সাংবাদিক জিয়াউল ইসলাম।
ওই প্রতিবেদনের মাধ্যমে সম্মানহানি ও চাঁদা দাবির অভিযোগ করে পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. শহিদুর রহমান সোমবার (২৯ এপ্রিল) বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন। মামলার আবেদনে তিনি বলেন, গরুতে ফসল নষ্ট করা নিয়ে সাংবাদিক জিয়াউল অন্য আসামিদের ডেকে এনে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে ছেড়ে দেন। ভিডিও ছাড়ার আগে জিয়াউল তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ফেসবুকে ভিডিও ছেড়ে দিয়ে সম্মানহানি করে।
আরটিভির সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম প্রতিবেদন প্রকাশ কিংবা প্রতিবেদন তৈরির সময় ঘটনাস্থলে না থাকলেও তাঁকেও আসামি করা হয়। তাওহীদুলের পরিবারের সঙ্গে শহিদুরের দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিক তাওহীদুল ইসলাম বলেন, শহিদুর রহমান তাঁর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। ওই ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন সম্পর্কে তাঁর চাচা। গত নির্বাচনে তিনি চাচার পক্ষে নির্বাচন করেন। এ জন্য তিনি (শহিদুর) প্রতিপক্ষ হিসেবে নানা ষড়যন্ত্র করছেন। সর্বশেষ ঘটনাস্থলে না থাকলেও তাঁকে আসামি করেছেন। প্রায় এক বছর আগে শহিদুর রহমানে ছেলে সোহেল মুন্সি আমাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়েছে। পরে আমি পাথরঘাটা থানায় চারজনকে আসামি করে একটি সাধারণ ডাইরি করি। এখনো আমাকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখায় শহিদুর রহমান এবং তার ছেলে সোহেল মুন্সি
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী ও ইউপি সদস্য শহিদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এর আগে, গত ৪ এপ্রিল পাথরঘাটার তিন সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। স্থানীয় দুটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন লাইভ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।