জিম্মি বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার হামাস সরকারকে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। এই সময়ের মধ্যে চুক্তি না করলে গাজার রাফাহতে হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে তেল আবিব।
প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কসাই খ্যাত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার কবে এই আল্টিমেটাম দিয়েছে সেটি স্পষ্ট করে করেনি সংবাদমাধ্যমটি। তবে প্রতিবেদনে এক মিশরীয় কর্মকর্তার শুক্রবারের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থানরত হামাসের নেতাদের হাতে চুক্তির প্রস্তাব তুলে দেওয়া হয়েছে। যেটি তৈরি করেছে মিশর।
গাজায় অবস্থানরত হামাসের প্রভাবশালী নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ার এখনও এ প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তার কাছে নতুন প্রস্তাবটি পৌঁছেছে কিনা সে বিষয়টিও স্পষ্ট নয়।
ইসরাইলের দেয়া চুক্তি প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে গাজায় ৪০ দিন যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে ৩৩ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। একই সময়ে ফিলিস্তিনি জিম্মিদের মুক্তি দেবে ইসরাইল।
দ্বিতীয় ধাপে অন্তত ছয় সপ্তাহ যুদ্ধ বন্ধ থাকবে। এ সময়ের মধ্যে দুই পক্ষই জিম্মিদের মুক্তি দেবে।
এছাড়াও দুই পক্ষ রাজি থাকলে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ পরবর্তীতে বাড়ানো হবে।
তবে মিশর ও ইসরাইলের তৈরি এ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করার বদলে হামাস নতুন প্রস্তাব দিতে পারে বলে জানিয়েছে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল।
এর আগে গেলো বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান চালায় গাজার হামাস সরকার। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল।
ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ৮০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়াও নিখোঁজ রয়েছেন কয়েক হাজার গাজাবাসী।
এ গণহত্যা বন্ধের আহবান জানিয়ে জাতিসংঘ বলছে, ইসরাইলি আক্রমণের ফলে গাজার জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। গাজার ৭০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, গাজার ২২ লাখ অধিবাসী দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে বিশ্বকে জবাবদিহি করতে হবে।
এমএইচ