সকল প্রকার অনিয়ম যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা গাজীপুর অফিস (বিআরটিএ) আর দুর্নীতি- এ দুটি যেন অভিন্ন সূত্রে গাঁথা।
সম্প্রতি সময়ের কণ্ঠস্বরে ‘গাজীপুর বিআরটিএ: দালাল দিয়ে পরীক্ষার খাতা দেখান সহকারী পরিচালক!’ এবং ‘গাজীপুরে বিআরটিএ'র পোশাকে ভ্রাম্যমান আদালতে দালাল’ এমন শিরোনামে দুটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নিজেদের দুর্নীতিকে আড়াল করতে গাজীপুর বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তাদের তৎপড়তা দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিআরটিএর চিন্হিত যে দুই দালালকে ব্যাবহার করে সহকারী পরিচালক আবু নাঈম এবং মোটরযান পরিদর্শক অহিদুর রহমান গ্রাহকদের হয়রানি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা, তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। চিন্হিত সেই দালালদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে আরেক দালাল রুহুলকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে।
রুহুলের পরিবার এবং একটি নিদিষ্ট সূএ জানায়, রুহুল দীর্ঘদিন দিনে গাজীপুর বিআরটিএ অফিসে কাজ করে থাকে। অফিস প্রধান আবু নাঈম এবং মোটরযান পরিদর্শক অহিদুর রহমানের বিভিন্ন কাজ করে থাকে সে। অফিস কর্তাদের সাথে সখ্যতা থাকলেও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাশের জন্য নির্ধারিত ২০০০ টাকা ইন্সপেক্টর অহিদুর রহমানকে দিয়েই কাজ করতো সে।
পরিবারের দাবি গাজীপুর বিআরটিএ অফিসের সকল রুমেই নিয়মিত যাতায়াত ছিলো রুহুলের।
একাধিকবার দেখা গেছে, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিয়ে সহকারী পরিচালক আবু নাঈমের রুম থেকে ইন্সপেক্টর অহিদুর রহমানের রুম পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়াতে। এরপর রুহুলের বিআরটিএ পোশাক পরিহিত ছবিটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে রুহুলকে ফোন দেন সহকারী পরিচালক আবু নাঈম। ফোন দিয়ে রুহুলকে বলেন এক ম্যাজিস্ট্রেটের ফিঙ্গারপ্রিন্ট করাতে হবে। আবু নাঈমের ফোন পেয়ে সে বিআরটিএ অফিসের দোতলায় উঠতেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট তাকে আটক করে। রুহুলের মোবাইল ফোন এবং বিআরটিএ অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করলেই এর সত্যতা পাওয়া যাবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২ মে) বিকালে রুহুলকে তিন মাসের কারাদন্ড এবং ২০০ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মো. হাসিবুর রহমান।
এ বিষয়ে গাজীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক আবু নাঈমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেনি। তবে এর আগে রুহুলকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের অফিসে জনবল কম তাই তাকে পাঠানো হয়েছে। তবে সে ভুল করে অফিসের পোশাক পরে ফেলেছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মো. হাসিবুর রহমান বলেন, বিআরটিএ অফিস থেকে অভিযোগ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সরকারি কাজে বাধা এবং বিআরটিএ অফিসের নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগে তাকে জেল এবং জরিমানা করা হয়েছে।
এমআর