এইমাত্র
  • মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারে এশিয়ায় পিছিয়ে বাংলাদেশের নারীরা
  • টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে দ্রব্যমূল্য কমবে: সাঈদ খোকন
  • অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ মিলল শিক্ষকের বাড়িতে
  • চাঁদপুরে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ কার্যক্রম শুরু
  • চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং লিডারসহ গ্রেফতার ৮
  • তিন জেলায় বজ্রপাতে ৭ জনের মৃত্যু
  • আচরণবিধি লঙ্ঘনে ১১ জনকে ৪৮ হাজার টাকা জরিমানা
  • করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১
  • নাটোরে পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধুর আত্মহত্যা
  • রাতেই ৬০ কিমি বেগে বজ্রসহ ঝড়ের শঙ্কা, যেসব অঞ্চলে সতর্কসংকেত
  • আজ শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪
    ধর্ম ও জীবন

    হজ্বের ঐতিহাসিক ইতিহাস

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৫ মে ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম
    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৫ মে ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম

    হজ্বের ঐতিহাসিক ইতিহাস

    ধর্ম ও জীবন ডেস্ক প্রকাশ: ৫ মে ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম

    সারা বিশ্বের সকল মুসলমানদের বার্ষিক সম্মেলন হল হজ্ব। মুসলমানদের জন্য, ইসলাম আল্লাহর রচিত একটি জীবন ব্যবস্থা। এই জীবন ব্যবস্থা পাঁচটি স্থম্ভের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে একটি হজ্ব। দল, মত, গোত্র, বর্ণ নির্বিশেষে মুসলমান মাত্রই অর্থ ও শারীরিক ক্ষমতার অধিকারি হলেই হজ্ব ফরজ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার জন্য অবশ্য কর্তব্য’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)।

    ইসলামি শরিয়াতের পরিভাষায় জিলহজ্জ মাসের নির্দিষ্ট তারিখে পবিত্র কাবা ঘরে তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া পাহাড়ে সায়ি, আরাফা মাঠ-মিনা-মুজদালিফায় অবস্থানসহ হযরত মুহাম্মদ (সা.) নির্ধারিত নিয়মে আনুষঙ্গিক ইবাদতসমূহ পালন করাকে হজ্ব বলে। পবিত্র কোরআনে উল্লিখিত হয়েছে যে, পৃথিবীতে আল্লাহতায়ালার ইবাদতের জন্য নির্মিত প্রথম ইমারত হচ্ছে মক্কার পবিত্র কাবা, যা ‘বায়তুল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর ঘর’ নামে অভিহিত।

    এই ঘরের সূচনা হয়েছিল আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আ.) এর সময় থেকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আদি পিতা হযরত আদম (আ.) কে জান্নাতে অবস্থিত ‘বায়তুল মামুর’ বরাবর ঠিক নিচে পবিত্র কাবা ঘরের ভিত্তি নির্মাণ করার জন্য আদেশ করেন। হাদিসে উল্লেখ আছে, এই বাইতুল মামুরে একসঙ্গে সত্তর হাজার ফেরেস্তা একবার তাওয়াফ করার পর আর সুযোগ পান না।তবে মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জন্য তাওয়াফের এই অনন্য সুযোগ দিতে চান বলে হযরত আদম (আ.) কে এখানেই পবিত্র কাবা ঘর নির্মাণের জন্য আদেশ করেন।

    এই ঘটনার বহু শতক পরে, হজরত নূহ (আ.)-এর যুগের মহাপ্লাবনে কাবা শরিফ ধসে যায়। পরে আল্লাহর হুকুমে হজরত ইবরাহিম (আ.) সন্তান ইসমাঈল (আ.)-কে সঙ্গে নিয়ে কাবাঘরের পুনঃনির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। ইব্রাহিম (আ.) কে বলা হয় আবুল আম্বিয়া তথা নবীদের আদি পিতা এবং মুসলমানদের জাতির পিতা। আল্লাহ হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) আদেশ দেন : ‘আমার গৃহকে পবিত্র রেখো তাদের জন্য যারা তাওয়াফ করে এবং যারা সালাত-এ দাঁড়ায়, রুকু করে ও সিজদা করে। এবং মানুষের কাছে হজ্বের ঘোষণা করে দাও, ওরা তোমার নিকট আসবে পদব্রজে ও সর্বপ্রকার দ্রুতগামী উটের পৃষ্ঠে, ওরা আসবে দূর-দূরান্তরের পথ অতিক্রম করে।’ এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে হজরত ইব্রাহিম (আ.) সর্বপ্রথম কাবাকে কেন্দ্র করে হজ্বের প্রবর্তন করেন।

    হজরত আবুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবা শরিফ নির্মাণের পর আল্লাহকে বললেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার নির্দেশে বাইতুল্লাহকে নির্মাণ করেছি। অতপর আল্লাহ তাকে হজের ঘোষণা দিতে আদেশ দিলেন- তিনি বললেন, আমার আওয়াজ কী করে (অতদূর) পৌছবে? আল্লাহ তাআলা বললেন, তুমি ঘোষণা করে দাও। তোমার ঘোষণার আওয়াজ বিশ্ব মানবতার কানে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন হে রব! ঘোষণায় কী বলব? আল্লাহ বললেন, বলো- ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে এবং জান্নাতে পৌঁছাতে আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ্ব ফরজ করেছেন।’

    আল্লাহ ইব্রাহিম (আ.) কে বৃদ্ধ বয়সে স্ত্রী হাজেরার গর্ভে পুত্র ইসমাইল (আ.) কে দান করেন। তারপর তিনি আল্লাহর হুকুমে শিশুপুত্র ইসমাইল এবং হাজেরাকে ফিলিস্তিন ত্যাগ করে পবিত্র কাবা ঘরের কাছে রেখে আসেন। এরপর থেকে ইব্রাহিম (আ.), স্ত্রী হাজেরা এবং পুত্র ইসমাইলকে (আ.) নিয়েই মূলত হজ্ব ও পবিত্র কাবা ঘরের ইতিহাস রচিত হয়।

    ইসমাইল (আ.)-এর মৃত্যুর পর পবিত্র কাবা বিভিন্ন জাতি-উপজাতির দখলে চলে আসে এবং তারা একে মুর্তিপূজার জন্য ব্যবহার করতে থাকে এবং এ সময় উপত্যকা এলাকায় মৌসুমী বন্যার কবলে পড়ে কাবা ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। অতঃপর ৬৩০ সালে মুহাম্মদ (স.) কাবাকে আবাদ করে পুনরায় আল্লাহর নামে উৎসর্গ করেন।

    কুরাইশরা যখন কাবা পুণঃনির্মাণ করেন, তখন জান্নাত থেকে আসা পাথর ‘হাজারে আসওয়াদকে কাবার এক কোণে স্থাপন করা হয় মুহাম্মদ (স.)-এর মাধ্যমে। কাবার এক পাশে একটি স্থান রয়েছে যার নাম ‘মাকামে ইবরাহিম’; এখানে দাঁড়িয়ে ইবরাহিম (আ.) কাবার নির্মাণকাজ করতেন এবং পর্যবেক্ষণ করতেন, এখানে একটি পাথরে তাঁর পদছাপ রয়েছে। কাবাঘরের উত্তর দিকে কাবা সংলগ্ন অর্ধ-বৃত্তাকার একটি উঁচু দেয়াল আছে যা কাবা ঘরেরই অংশ যার নাম ‘হাতিম’ বা হিজর। হাজরে আসওয়াদ ও কাবাঘরের দরজার মাঝের স্থানকে ‘মুলতাজাম’ বলা হয়। কাবাঘরকে বৃষ্টি ও ধুলাবালী থেকে রক্ষার জন্য একটি চাদর দিয়ে আবৃত করে রাখা হয় যা ‘গিলাফ’ নামে পরিচিত।

    এভাবে হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সর্বযুগের আল্লাহপ্রেমিক, আল্লাহর জন্য নিবেদিতপ্রাণ নবী-রাসুলগণসহ আল্লাহর নেককার, সত্যপ্রাণ ও মাকবুল বান্দাগণের পরম ব্যকুলতার সঙ্গে আল্লাহর ঘরে হাজিরা দেওয়ার মাধ্যমে রচিত হয়েছে হজ্ব ও জিয়ারতের প্রেমময় বিধান। (সূত্র: মাআরিফুল কোরআন)

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…