এইমাত্র
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় আরও ২ জন আটক
  • প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় উপদেষ্টার দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু
  • সাবেক বিচারপতি মেজবাহ উদ্দিন মারা গেছেন
  • বাসভবন-কার্যালয় প্রস্তুত, সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
  • ফটিকছড়িতে অবাধে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা-কৃষি জমি, হুমকিতে পরিবেশ
  • আনিস আলমগীর, শাওনসহ ৪জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
  • মেসি-শচীনের ঐতিহাসিক সাক্ষাৎ, উপহার বিনিময়
  • ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় মামলা
  • হাবিবুরসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক শুরু আজ
  • বাংলাদেশি শান্তিকর্মীদের ওপর হামলা, সুদানকে সতর্কবার্তা জাতিসংঘের
  • আজ সোমবার, ১ পৌষ, ১৪৩২ | ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    আন্তর্জাতিক

    ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক টানাপোড়েন: সমঝোতার বার্তা না কৌশলগত চাপ?

    রবিন দাস প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
    রবিন দাস প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম

    ইরান-যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক টানাপোড়েন: সমঝোতার বার্তা না কৌশলগত চাপ?

    রবিন দাস প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ০৬:৪১ পিএম
    প্রতীকী ছবি

    পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা টানাপোড়েন অবসান ঘটাতে এবার আলোচনায় আগ্রহ দেখিয়েছে ইরান। তবে স্পষ্ট শর্ত হিসেবে তেহরান জানিয়েছে, যদি যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসতে চায়, তবে প্রথমে ইরানের উপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে হবে। পাশাপাশি ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোকেও একাধিক বার্তা পাঠিয়েছে তারা।

    বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘গ্যারান্টি’ চাওয়ার অর্থ, ইরান ভবিষ্যতের চুক্তি যেন আবার ভেঙে না যায়, সে নিশ্চয়তা চাইছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এটা কি আসলেই আলোচনার আগ্রহ, না কূটনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল?

    পুনরুজ্জীবিত আলোচনার পেছনে বাস্তবতা

    ইরানের অবস্থান গত কয়েক মাসে এক ধরনের দ্ব্যর্থতা তৈরি করেছে। একদিকে তারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, আবার অন্যদিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি তারা স্থগিত করবে না। বাস্তবে ইরান তার পরমাণু সক্ষমতা একটি রাজনৈতিক ও কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। যার মাধ্যমে একদিকে তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের উপর চাপ তৈরি করতে চায়। অন্যদিকে অভ্যন্তরীণভাবে নিজেদের ‘অবিচল’ ভাবমূর্তি বজায় রাখছে।

    ‘গ্যারান্টি’ চাওয়া কতটা যৌক্তিক?

    ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে যে ‘গ্যারান্টি’ চাইছে, সেটির পেছনে যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকার মধ্যকার এই চুক্তির আশা করা হয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কিছুটা কমবে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে হঠাৎ করে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় সেই আস্থা ভেঙে পড়ে।

    এখন ইরান চাইছে এমন কিছু নিশ্চয়তা, যাতে ভবিষ্যতে কোনো মার্কিন সরকার রাজনৈতিক কারণে পুনরায় চুক্তি ভাঙতে না পারে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রশাসন পরিবর্তনের পর চুক্তির ধারাবাহিকতা কতটা বজায় থাকবে। সেটা বড় প্রশ্ন।

    চিকন সুতোয় ঝুলছে কূটনীতি

    ওমানের মধ্যস্থতায় ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত দুই দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা প্রমাণ করে, উভয় পক্ষই কিছুটা হলেও সমঝোতার পথ খুঁজছে। কিন্তু কোনো পক্ষই আপাতত নিজেদের অবস্থান থেকে একচুলও নড়ছে না।

    ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যেমন একদিকে বলছেন, আলোচনায় আগ্রহ আছে, আবার বলছেন-চুক্তি না হলেও ইরান টিকে থাকবে।

    আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট: রাশিয়া-চীন বনাম পশ্চিমা জোট

    ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এই আলোচনায় আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির একটি বিষয় লক্ষ্যণীয়। রাশিয়া ও চীন দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের পাশে অবস্থান করছে এবং পশ্চিমাদের ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’-এর বিরুদ্ধে সমালোচনায় তারা সোচ্চার।

    অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চায় ইরান যেন পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রাখে ও অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা থেকে সরে আসে। এমন পরিস্থিতিতে পারমাণবিক চুক্তি শুধু একটি প্রযুক্তিগত চুক্তি নয়, এটি একধরনের ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা ও প্রভাব বিস্তার সংক্রান্ত লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    সমঝোতা কি আদৌ সম্ভব?

    ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন করে আলোচনার ইচ্ছা যতটা ইতিবাচক, বাস্তবতা ততটাই জটিল। নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক অবিশ্বাস, আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং অভ্যন্তরীণ চাপ। সব মিলিয়ে সমঝোতার পথ এখনো কঠিন এবং অনিশ্চিত। তবু, যদি উভয় পক্ষ কৌশলগত স্বার্থ বিবেচনায় কিছু ছাড় দিতে রাজি না হয় তাহলে এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…