গত বছরের তুলনায় চলতি আউশ মৌসুমে ফলন ভালো ও দাম বেশী হওয়ায় প্রতিটি কৃষক পরিবার খুশী। অসময়ে আউশ চাষে সাফল্য পেয়ে কৃষকের মনে বিরাজ করছে আনন্দের বন্যা। ময়মনসিংহের নান্দাইলে আউশ ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি।
সরেজমিন আউশ মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কৃষক ধান পাকতে শুরু করেছে। ধানের ভারে নুয়ে পড়েছে শীষগুলো। আউশ ধানে যেন সোনার রূপ, যার আলোয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কৃষকের মুখ। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে প্রস্তুত প্রতিটি কৃষক। প্রতিটি ক্ষেতে যেন ফুটে উঠেছে সোনালী রঙ। সোনালী রঙে রাঙিয়ে তুলেছে মাঠের পর মাঠ।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর নান্দাইলে ১২৫০ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আউশের আবাদ হয়েছে ৮৫০ হেক্টর জমিতে। গড় ফলন হেক্টরে ২.৮২ মেট্রিক টন।
একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে বীরবেতাগৈর, শেরপুর, খারুয়া, নান্দাইল, গাংগাইল, মোয়াজ্জেমপুর, চন্ডিপাশা ও পৌরসভায় আউশ ধান আবাদ বেশী হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নেও বিক্ষিপ্তভাবে আবাদ হয়েছে।
অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের তদারকির কারণে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের।
বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক মুনজুরুল হক, আলতাফ, সাভার গ্রামের মাসুম মিয়া, রাজাবাড়িয়া গ্রামের আমিনুল হকসহ বেশ কয়েকজন কৃষক বলেন, এ বছর আউশ ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ভালো ফলন পেয়ে আমরা খুব খুশী। তাছাড়া বাজারে ধানের দামও বেশি।
সাভার গ্রামের মাসুম মিয়া বলেন, এ বছর আমি ৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে ধান কাটা শুরু করবো।
কৃষক মুনজুরুল হক বলেন, আমি ৭০ শতক জমিতে আউশ ধান চাষ করেছি। অনেক ভালো ফলন হয়েছে। আউশ ধান কেটে রোপা আমন চাষ করবো।
উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল হক জানান, এ বছর ব্রি ধান ৪৮, ৮৫, ৯৮ জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। ২৬টি প্রদর্শনী প্লট স্থাপন করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ শত মেট্রিক টন।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নাঈমা সুলতানা বলেন, এ বছর নান্দাইলে আউশের বাম্পার ফলন হয়েছে। আউশে সেচ, সার ও শ্রম কম খরচ হয়। তাই কৃষক আউশ ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বাজারে ধানের দাম ভালো থাকায় নান্দাইলের কৃষকগণ অনেক লাভবান হবেন।
এইচএ