কিশোরগঞ্জে গাড়ি কিনার জন্য টাকা ধার দিয়ে ফেরত চাইতে গিয়ে হত্যার হুমকির শিকার হয়েছেন আয়েশা আক্তার নামের এক নারী।
এ ঘটনায় গতকাল বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত তিন মাস আগে গাড়ি কিনার কথা বলে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া মো: লুৎফুর রহমান তিন লাখ টাকা ধার নেন ভুক্তভোগী আয়েশার কাছ থেকে। টাকা ধার নেয়ার পরেই লুৎফুরের আচরণে ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়; কথাবার্তায় খারাপ ব্যবহার করতে থাকেন। টাকা দিয়ে গাড়ি কিনার কথা থাকলেও লুৎফুর গাড়ি কিনেননি। এমতাবস্থায় আয়েশা লুৎফুরের কাছে টাকা চাইলে নানান তালবাহানা করতে থাকে। এক পর্যায়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সালিসি দরবারে লুৎফুর টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে ১০০ টাকা মূল্যের তিনটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন এবং তার স্বাক্ষরিত তিন লাখ টাকা উল্লেখ করে কৃষি ব্যাংক করিমগঞ্জ শাখার একটি চেক প্রদান করেন। পরবর্তীতে গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) লুৎফুরের কাছে টাকা ফেরত দিতে বললে আয়েশাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এসময় টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে আয়েশাকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার বলেন, 'লুৎফুর আমার বোনের বাসায় ভাড়া থাকতো, সেখানে আমিও ভাড়াটিয়া ছিলাম। শুরুর দিকে ভালো আচরণ করে লুৎফুর আমাদের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে গাড়ি কিনার কথা বলে তিন লাখ টাকা ধার চাইলে আমি তাকে বিশ্বাস করে ধার দিই। কিন্তু যখন দেখি লুৎফুর টাকা দিয়ে গাড়ি কিনে নি, তখন টাকা চাইলে নানান তালবাহানা করতে থাকে। তার আচরণে অসন্তুষ্ট হয়ে স্থানীয় দরবার ডাকলে সেখানে লুৎফুর টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে। এসময় লুৎফুরের নিজস্ব কৃষি ব্যাংকের একাউন্টের একটি চেকে তিন লাখ টাকা উল্লেখ করে স্বাক্ষর করে দেন।'
আয়েশা আক্তার বলেন, 'আমি আমার পাওনা টাকা চাইলে সে একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে, নানা ধরনের হুমকি দিয়ে পাওনা টাকা ফেরৎ দেবেনা বলে। আর পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে পুনরায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে আমাকে খুন জখম করার হুমকি দেয়। বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে। তাই আমি চিন্তিত হয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য থানায় আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, রাষ্ট্র ও সরকারের কাছে আমি বিচার প্রার্থনা করছি।'
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মো: লুৎফুর রহমানের ফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোনে সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি সময়ের কণ্ঠস্বরকে নিশ্চিত করে জানান, 'এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এসআর