শীত এলেই আমাদের শরীরের ভেতরে-বাইরে নানান পরিবর্তন দেখা দেয়। ঠান্ডা লাগা, ক্ষুধামন্দা, ত্বকের শুষ্কতা, ক্লান্তি কিংবা জয়েন্টের ব্যথা যেন দৈনন্দিন সঙ্গী হয়ে ওঠে। এই মৌসুমে তাই প্রয়োজন এমন কিছু খাবার, যা শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখবে, শক্তি দেবে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিনের খাবারে অল্প পরিমাণ ঘি যোগ করলেই এসব সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ঘি শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, বরং শীতে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্যও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে শীতের দিনে ঘি হয়ে ওঠে আমাদের শরীরের ভালো বন্ধু-
ঘি এমন কিছু স্যাচুরেটেড ফ্যাটে ভরপুর যা দেহে ভেতর থেকে তাপ তৈরি করতে সাহায্য করে। যাদের ঠান্ডা সহ্য করতে কষ্ট হয়, সারাদিন অলস লাগে বা শীতে খিদে কমে যায় তাদের জন্য ঘি এক প্রকার প্রাকৃতিক এনার্জি বুস্টার। অল্প করে ঘি খেলে শরীরে শক্তি ধরে রাখা সহজ হয় এবং দিনভর কাজে উদ্যম আসে।
শীতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ একটু বেশিই দেখা দেয়। তাই এই সময় শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভালো থাকা জরুরি। ঘি-তে থাকা বিউটাইরেট নামের উপাদান অন্ত্রকে সুস্থ রাখে আর সুস্থ অন্ত্র মানেই শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এটি প্রদাহ কমায়, অন্ত্রের আস্তরণ ঠিক রাখে এবং শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে আরও প্রস্তুত করে।
শুষ্ক ত্বক ও ভঙ্গুর চুলে পুষ্টি যোগায়: শীতের বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং চুল দ্রুত ভেঙে যায়। ঘি এর ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরকে ভিতর থেকে পুষ্ট করে, ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং চুলকে করে নরম–স্বাস্থ্যকর। আয়ুর্বেদে ঘি-কে ‘রসায়ন’ বলা হয়, কারণ এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনার মতো পুনরুজ্জীবনকারী গুণ রাখে।
জয়েন্টের ব্যথা কমায় ও গতিশীলতা বাড়ায়: শীতের ঠান্ডায় অনেকের জয়েন্টে ব্যথা, কাঠিন্য বা প্রদাহ বাড়ে। ঘি এর স্বাভাবিক লুব্রিকেটিং বৈশিষ্ট্য জয়েন্টকে নরম রাখে এবং নড়াচড়া সহজ করে। নিয়মিত ঘি খেলে জয়েন্টে পুষ্টি পৌঁছায়, ফলে ব্যথা কম অনুভূত হয়।
পুষ্টি শোষণে সহায়ক: শীতের গাজর, পালং শাক, সরিষার শাকসহ অনেক সবজিতেই থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে; যেগুলো শরীর শোষণ করতে পারে কেবল তখনই, যখন খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে। ঘি সেই চর্বির ভূমিকা পালন করে। ফলে শরীর সহজে প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করতে পারে এবং খাবারের পুষ্টিগুণও বেড়ে যায়।
এইচএ