অর্ধশতাব্দী ধরে সেতুবিহীন ঝপঝপিয়া নদী পার হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ। চরবেড়া, চরগোজা, বড় গোজা, মানিকদিয়ার, তেলকুপি, ভরমোহনী ও সাতটিক্রি এলাকার শিক্ষার্থী-জনসাধারণ প্রতিদিন দড়ি টেনে ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে নদী পার হচ্ছেন। এতে চরম দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কা স্থায়ী হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় চরগোজা গ্রামের সত্তরোর্ধ ইছহাক মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পঞ্চাশ বছর দড়ি টানি, তবুও সেতুর দেখা মিলল না। কত নেতা প্রতিশ্রুতি দিল, কেউ কথা রাখে নাই। জীবনে ব্রিজ দেইখা যাইতে পারমু কিনা সন্দেহ।
সলঙ্গা ধামাইকান্দি সড়কের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝপঝপিয়া নদী পার হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ, বাজার, ডাকঘর, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, থানা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন এলাকাবাসী। চরবেড়া খেয়াঘাটে ষষ্ঠি চন্দ্র দাস নামের এক ব্যক্তি ডিঙ্গি নৌকায় পারাপার করলেও বয়সজনিত কারণে অধিকাংশ সময় তিনি ঘাটে অনুপস্থিত থাকেন। ফলে নৌকা ব্যবহারকারীদের নিজেরাই দড়ি টেনে পার হতে হয়।
চরবেড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরবেড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, মাঝি না থাকায় তারা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হন। দড়ি ছিঁড়ে যাওয়া বা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার ঘটনা নিত্যদিনের। অনেকের বই-খাতা ভিজে নষ্ট হয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্বাধীনতার আগে বাঁশের সাঁকো থাকলেও মুক্তিযোদ্ধোত্তর সময়ে আর কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিকে বহুবার আবেদন করেও কেবল আশ্বাস ছাড়া কিছু পাওয়া যায়নি।
সলঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মন্টু জানান, ঝপঝপিয়া নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। রাজনৈতিকভাবে বিষয়টি গুরুত্ব পেলেও বাস্তবায়ন হয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এলজিইডি একাধিকবার জরিপ করেছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ শহিদুল্লাহ বলেন, নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব প্রস্তুত করে এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললেই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এসআর