কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গভীর রাতের অন্ধকারে ঘটলো এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ছুটিতে বাড়ি এসে নিজ চাচাতো ভাই মোফাজ্জল হোসেনকে নৃশংসভাবে কামড়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই এর বিরুদ্ধে।
গুরুতর আহত মোফাজ্জল হোসেন এখন পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
এমনই বিস্ফোরক ঘটনা ঘটেছে গত রবিবার কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামে। গুরুতর আহত মোফাজ্জল হোসেন উপজেলার চন্ডিপাশা ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের সফির উদ্দিনের ছেলে। অভিযুক্ত এএসআই আরিফুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ উদ্দিনের বড় ছেলে এবং বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা পুলিশে কর্মরত।
এ দিকে এ ঘটনার পর পুলিশ সদস্য আহতের আত্মীদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বলেছেন, "আমি পুলিশ, মারলেও আমাদের বিচার নাই!" এ ঘটনায় গত সোমবার আহত মোফাজ্জলের বড় বোন সালমা আক্তার বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গত রবিবার গভীর রাতে মোফাজ্জল হোসেনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় পুলিশ সদস্য আরিফুল ইসলাম। তাকে পিটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়ে গুরুতর আহত করেন। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠায়। শুধু মারধর নয়—হামলার পর মোফাজ্জলের প্রবাসে যাওয়ার জন্য জমানো ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে আরিফুল ইসলাম বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগে চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই আরিফুল ও তার ভাই শরীফুল এলাকায় কথায়-কথায় হুমকি-ধমকি, আধিপত্য বিস্তার আর মারধরের জন্য কুখ্যাত। এমনকি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাও রেহাই পাননি তাদের আচরণ থেকে। সেদিন রাতে মোফাজ্জলকে যে নির্মমতার শিকার হতে হয়েছে, তার বর্ণনা শোনাও শিউরে উঠার মতো। ক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও তিনি আতঙ্কে কাঁপছিলেন।
আহত মোফাজ্জলের করুণ অভিযোগ—“চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই আরিফরা এলাকায় আধিপত্য দেখায়। আমাকে মারার সময় সে বলে— ‘আমি পুলিশ, মারলেও আমাদের কোনো বিচার নাই।’ আমি প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার চাই।”
মামলার বাদী ও মোফাজ্জলের বড় বোন সালমা আক্তারের কণ্ঠেও ক্ষোভ ও অসহায়তা— “যে পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দেবে, সেই পুলিশই যদি আমাদের ওপর হামলা করে, তাহলে বিচার পাবো কোথায়? অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু সে যেভাবে ভয় দেখায়, আমরা চিন্তায় আছি, তার ডিপার্টমেন্ট কি আমলে নিবে? আমরা কি বিচার পাব? আমার ভাইয়ের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই আরিফুলের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন— “এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান হবে।” বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস. এম. আরিফ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একজন অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এফএস