উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা জেঁকে বসেছে। গত চার দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলছে না। ফলে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে পড়েছে তিস্তা পাড়ের হতদরিদ্র, ছিন্নমূল ও দৈনন্দিন স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন বাইরে বের হচ্ছেন না। শীতের দাপটে প্রত্যন্ত গ্রাম ও চরাঞ্চলের অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১১টা পেরিয়ে গেলেও সূর্যের দেখা এখনও মেলেনি। রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, সামনে শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে ঠান্ডা ও কুয়াশা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা শহরের রিকশাচালক এনামুল হোসেন বলেন, “এই ঠান্ডায় লোকজন কম, তাই ভ্যান নিয়ে বসে আছি। পরিবার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঠান্ডায় কাজকাম করা যায় না, হাত গুটিয়ে আসে। খুব কষ্টের মধ্যে আছি আমরা।” কষ্ট হলেও নিজের জীবিকার তাগিদে ভোরেই রিকশা নিয়ে বের হতে হয়েছে। আজ অনেক বেশি ঠান্ডা পড়েছে। এত বেশি ঠান্ডায় অনেকেই রিকশায় চড়তে চায় না, তবুও বের হয়েছি। পরিবার বাঁচানোর জন্য তো রিকশা চালাতেই হবে।
সিভিল সার্জন আবদুল হাকিম জানিয়েছেন, গত পাঁচ দিন ধরে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও অ্যাজমাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এজন্য শিশু ও বৃদ্ধদের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে, যাতে কোনো প্রকার ঠান্ডা না লাগে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এ অঞ্চলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত পাঁচ দিন ধরে এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামীতে তাপমাত্রা আরও কমে ভারী শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ১০ হাজার শীতবস্ত্র (কম্বল) বিতরণ করা হয়েছে এবং আরও ৫০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণের প্রস্তুতি চলছে।
এনআই