এইমাত্র
  • হেফাজত নেতা মামুনুল হক মুক্তি পেতে যাচ্ছেন
  • চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বাড়াতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠি
  • পৃথিবীর সব প্রাণী ধ্বংস হবে কবে, জানালেন বিজ্ঞানীরা
  • রাত ৮টার পর শপিং মল বন্ধের নির্দেশনা
  • মালিতে রুটি-দুধের চেয়ে দাম বেশি বরফের
  • কক্সবাজারে বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ৬
  • নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: ইসি হাবীব
  • গরু-ছাগলে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ
  • মিয়ানমারে ৪৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড
  • অঙ্গীকারনামা দিয়ে জামিনে মুক্তি পেলেন সেই সঞ্জয় রক্ষিত
  • আজ মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
    দেশজুড়ে

    ২৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া শাহীদা ফিরে এলেন বাড়িতে

    আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৭ পিএম
    আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৭ পিএম

    ২৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া শাহীদা ফিরে এলেন বাড়িতে

    আবদুল লতিফ লায়ন, জামালপুর প্রতিনিধি প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:২৭ পিএম

    ২৭ বছর আগে ঢাকায় গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন শাহীদা আক্তার। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। এরপর অনেক খুঁজেও তাঁর মা–বাবা মেয়েকে ফিরে পাননি। শাহীদাও ঠিকানা বলতে না পারায় আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। সেই শাহীদাই দীর্ঘ ২৭ বছর পর বাবার বাড়ি খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, তাঁর মা–বাবাই আর বেঁচে নেই। চার বছর আগে দুজনে মারা গেছেন। বাড়িতে ফিরে ভাই বোনেদের সঙ্গে শাহিদার দেখা হয়েছে। তাঁদের পুনর্মিলনের মুহূর্তটিতে তৈরি হয় এক আবেগঘন দৃশ্য।

    জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার দিকপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম খলিল ও ছাবেদা বেগম দম্পতির মেয়ে শাহীদা। রবিবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তিনি ফিরে এসেছেন তাঁর বাড়িতে। এ সময় তাঁর বড় বোন খালেদা বেগম যখন চিনতে পারেন শাহীদাকে, একে অপরকে জড়িয়ে ধরে তাঁরা ডুকরে কাঁদতে শুরু করেন।

    শাহীদারা তিন বোন ও এক ভাই। তাঁদের মধ্যে শাহীদা তৃতীয়। বর্তমানে শাহীদা জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার ভৌলাকীপাড়া গ্রামে তাঁর বড় বোন খালেদার বাড়িতে অবস্থান করছেন।

    পরিবারের সদস্যরা জানান, ইব্রাহিম খলিল ও ছাবেদা বেগম দম্পতির অভাবের সংসার ছিল। গ্রামে তেমন কোনো কাজকর্ম ছিল না। বাধ্য হয়ে ১৯৯৭ সালে সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় উত্তরায় চলে যান। সেখানে তাঁর বাবা রিকশা চালাতেন। ঢাকায় যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে ছোট্ট শাহীদা লাকড়ি কুড়াতে যান। সেখান থেকে শাহীদা হারিয়ে যান। তাঁর মা–বাবা তাঁকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু তাঁর আর সন্ধান পাননি তাঁরা। এরপর থেকে শাহীদা নিখোঁজ ছিলেন। কীভাবে যেন শাহীদা চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে এক বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তাঁরাই তাঁকে গাজীপুরে সেলিম মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেন। তারপর থেকে শাহীদা স্বামীকে নিয়ে সেখানেই বসবাস করেন। শাহীদার ৭ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

    শাহীদা আক্তার বলেন, ‘আমি জীবনেও কল্পনা করিনি নিজের গ্রামে ফিরতে পারব। আমার ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করতে পারব। প্রায় সময় মা–বাবা ও পরিবারের কথা মনে পড়ত। কিন্তু ছোটবেলার আর কিছুই স্মরণ করতে পারতাম না। সম্প্রতি আমার মেয়ে নানা-নানির কথা জানতে চাইল। মেয়ের নানা রকম প্রশ্নে হঠাৎ বকশীগঞ্জের দিকপাড়া নামটি মনে পড়ে যায়। তখন থেকে বকশীগঞ্জের দিকপাড়া খুঁজতে থাকি। মা–বাবাকে দেখার জন্যই খুঁজতে খুঁজতে এই গ্রামে চলে আসি। নিজের পরিবার ও বাড়ি ঠিকই খুঁজে পেলাম। কিন্তু আমার মনের আশা পূরণ হলো না; কারণ, আমার মা–বাবাই আর পৃথিবীতে নেই। বোন, ভাইসহ পরিবারের অন্য সবাইকে পেলাম ঠিকই। কিন্তু মা–বাবাকে পেলাম না। তারপরও নিজের পরিবার পেলে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে।’

    শাহীদা নিজের ভাইবোনকে খুঁজে পেয়েছেন, এতে খুশি তাঁর স্বামী সেলিম মিয়া। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

    ২৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া ছোট বোনকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন বড় বোন খালেদা বেগম। তিনি বলেন, মা–বাবার সঙ্গে তাঁরা সবাই ঢাকায় চলে গিয়েছিলেন। ঢাকায় যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে তাঁর ছোট বোন শাহীদা হারিয়ে যায়। তারপর তাঁর আর কোনো সন্ধান পাননি তাঁরা। তাঁর কোনো দিন সন্ধান পাবেন তিনি চিন্তাও করেননি। দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর পর বোনকে ফিরে পেয়ে তাঁরা সবাই এখন আনন্দিত। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে শাহীদাকে একপলক দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন গ্রামবাসী।

    খালেদা বেগম আরও বলেন, ‘বোনের ছোট বয়সের অনেক স্মৃতি আমার মনে আছে। বোনকে হারানোর পর মন খারাপ করতাম। মনে হতো, বোনকে বুঝি কখনো ফিরে পাব না। তবে বাবা বলতেন, “শাহীদা বেঁচে আছে, কোনো একদিন ফিরে আসবে। একদিন না একদিন ঠিকই মেয়েকে পাব।” অবশেষে বাবার কথাই সত্য হলো। কিন্তু বাবা আর বেঁচে নেই। মা–বাবা বেঁচে থাকলে কতই–না খুশি হতেন।’

    এআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    সর্বশেষ প্রকাশিত

    Loading…