চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে। রমজানের প্রাক্কালে এই সংকট আরও গভীর হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের সহায়তা দিতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) আজ বুধবার থেকে তাদের ট্রাকসেলে পণ্যের পরিমাণ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতদিন যেখানে প্রতি ট্রাকে মাত্র ২০০ জন ক্রেতাকে পণ্য দেওয়া হতো, এখন থেকে তা বেড়ে ৪০০ জন হবে।
টিসিবির ট্রাকসেল মানেই দীর্ঘ লাইন, হুড়োহুড়ি, কখনো কখনো হাতাহাতির মতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। কমসংখ্যক ক্রেতাকে পণ্য সরবরাহ করার সীমাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হতো প্রতিনিয়ত। তবে, এবার সে ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
টিসিবির চট্টগ্রাম অফিসের প্রধান (যুগ্ম পরিচালক) মো. শফিকুর ইসলাম সময়ের কণ্ঠস্বর-কে জানান, নগরীর ২০টি নির্দিষ্ট পয়েন্টে প্রতিদিন ট্রাকসেলে পণ্য বিক্রি করা হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিটি ট্রাকে ২০০ জনের পরিবর্তে ৪০০ জনের জন্য পণ্য বরাদ্দ থাকবে। ফলে আরও বেশি মানুষ এই সুবিধার আওতায় আসবেন। বিশেষত নিম্নআয়ের মানুষ যাঁরা বাজারের চড়া দামের কারণে ন্যায্যমূল্যে পণ্য কিনতে নির্ভরশীল, তাঁরা সরাসরি উপকৃত হবেন।
তিনি আরও বলেন, রমজান মাসে খেজুরের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। এতদিন টিসিবি ট্রাকে প্রতিজন ক্রেতা ৫০০ গ্রাম খেজুর পেতেন। এবার তা বাড়িয়ে ১ কেজি করা হয়েছে। অন্যান্য পণ্যের দাম ও পরিমাণ পরিবর্তন না হলেও, এই উদ্যোগ রমজানে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির খবর বয়ে আনবে।
নতুন সংযোজন হিসেবে, এবারই প্রথম কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানেও টিসিবির ট্রাকসেল কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এতদিন এসব পার্বত্য এলাকায় এই সুবিধা ছিল না। এবার সেখানে ন্যায্যমূল্যে পণ্য পেয়ে সেখানকার নিম্নআয়ের মানুষও উপকৃত হবেন।
নির্ধারিত মূল্য তালিকা অনুযায়ী, এবার টিসিবির ট্রাকসেলে: ১ কেজি খেজুর ১৫৫ টাকা, ২ কেজি ছোলা ১২০ টাকা, ১ কেজি চিনি ৭০ টাকা, ২ লিটার সয়াবিন তেল ২০০ টাকা, এবং ২ কেজি মসুর ডাল ১২০ টাকায় বিক্রি করা হবে।
চট্টগ্রামে টিসিবির স্মার্ট ফ্যামিলি কার্ড কার্যকর না হওয়ায় গত জানুয়ারিতে ট্রাকসেল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দীর্ঘ এক মাস পর, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে খোলা ট্রাকে বিক্রি পুনরায় শুরু হয়। এখন যে কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে পণ্য নিতে পারছেন, যা সাধারণ ভোক্তাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।
রমজান মাসজুড়ে এই কার্যক্রম চলবে বলে টিসিবি জানিয়েছে। পণ্যের পরিমাণ বাড়ানোয় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাজারে বাড়তি চাপে যারা দিশেহারা, তাদের জন্য এই উদ্যোগ রমজানের আনন্দে কিছুটা প্রশান্তি আনবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসআর