বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চুক্তি ভিত্তিক চাষী’র বীজ আলুর মূল্য কমানোয় লোকসানের আশঙ্কা চাষীদের। অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় প্রতিকেজিতে ৮ টাকা কম নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর প্রতিবাদে শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর চর জামাইল এলাকায় সংবাদ সম্মেলন ও মানবন্ধন করেছে চুক্তিভিত্তিক বীজ আলু চাষীরা।
চুক্তিভিত্তিক চাষী শফিকুর রহমান জুয়েল বলেন, আমাদের দিয়ে চাষ করানো বীজ আলু ইতিমধ্যে বিএডিসি (আলু বীজ) নিয়ে গেছে। বিএডিসি হতে নির্ধারিত মূল্যে বীজ আলু বিক্রি করে বিপাকে পড়েছি। গতবছর বীজের যে মূল্য ছিল তার তুলনায় এ বছর ৮ টাকা কম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ মেটাতে কষ্টস্বাদ্য হয়ে পড়েছে। কৃষকদের উচ্চ মূল্য না হলেও গতবছরের মূল্য ঠিক রাখার দাবি জানাচ্ছি। গত বছর গ্রেড বেধে বীজ আলুর মূল্য ছিল ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। এ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজি। অথচ বীজ উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে ৩০ টাকা কেজি। গত বছর বিএডিসি থেকে ৫২ টাকা কেজি ধরে বীজ আলু ক্রয় করে চাষ করেছি তখন ৩৩ টাকা কেজি আমাদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছে। এ বছর ৬৬ টাকা কেজি ধরে বীজ আলু কিনতে হয়েছে। বর্তমান যেই মূল্য ধরা হয়েছে তাতে আমাদের একর প্রতি দশ হাজার টাকা লোকশান হবে।
কৃষক মাসুদ মিয়া ও সাকিব বলেন, বিএডিসি থেকে আমরা যারা চুক্তিভিত্তিক বীজ আলু চাষ করে থাকি তাদের প্রত্যেককে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ৭৫ হাজার টাকার একটি কৃষি ঋণ দেওয়া হয়। এবং সেই টাকা দিয়ে বিএডিসি আলু বীজ, ঔষধসহ আনুষাঙ্গিক কিছু জিনিস কিনে দেন। পরবর্তীতে সেই টাকা আমাদের এখান থেকে কেটে নেওয়া হয়। এছাড়াও আমাদের অতিরিক্ত একর প্রতি চাষ বাবদ ১০ হাজার টাকা, বীজ রোপনের পর মাটি দেওয়ার জন্য ১৩ হাজার, সেচ বাবদ ১০ হাজার, সার-ঔষধের জন্য ১০ হাজার, মাটি নিরানি ৮ হাজার, গাছ তুলা (হাম্বলিন) ২ হাজার, আলু তুলা ১৫ হাজার, আলু গ্রেড ৮ হাজার, যারা জমি চুক্তি নিয়ে চাষ করে সেই চুক্তি বাবদ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। যেখানে একর প্রতি ২২০ মণ আলু উৎপাদন হয়। এবং সেখান থেকে বীজের জন্য গ্রেড নির্ধারণ করে ১২০-১২৫ মণ আলু বিএডিসি নিয়ে যায়। বাকি আলু আমরা বিক্রি করে থাকি। কিশোরগঞ্জ-পাকুন্দিয়া জোনে চুক্তিভিত্তিক এবছর প্রায় ২২০ জন কৃষক বিএডিসি’র অধীনে আলু বীজ চাষ করেছে।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএডিসি (আলুবীজ) উপপরিচালক কৃষিবিদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ২০ এপ্রিল সরকার নির্ধারিত গ্রেড বেধে আলু বীজ ২৬-২৮ টাকা ধরে ক্রয় করার নির্দেশনা দিয়েছে। আমাদের এই মূল্যের অতিরিক্ত ক্রয় করার ক্ষমতা নেই।
এদিকে কিশোরগঞ্জ কার্যালয়ের বিএডিসি (আলুবীজ) উপপরিচালক কৃষিবিদ আক্তারুজ্জামান তালুকদার সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা সম্পর্কে জানেন না বলে জানান। সরকারিভাবে কয়েকদিনের মধ্যে সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করে দিবেন।
এসআর