চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় এক ব্যক্তিকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। অপহরণের ১০ ঘণ্টা পর তাঁকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
অপহৃত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ ইউনুস (৫০)। তিনি সাতকানিয়ার আমিলাইষ ইউনিয়নের দক্ষিণ হিলমিলি এলাকার বাসিন্দা এবং সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী নাসিমা আক্তার (৪৪) সাতকানিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রবিবার (১৮ মে) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে ইউনুস উত্তর ঢেমশা মাইজপাড়া এলাকায় তাঁর নির্মিত সেমিপাকা ঘরটি দেখতে যান। দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাঁর পথরোধ করে প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা এবং পরে চড়-থাপ্পড় মারেন। এরপর টেনেহিঁচড়ে তাঁকে পাশের একটি বিলের মধ্য দিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান।
দুপুর ২টা ৪ মিনিটে অপহৃত ইউনুসের মোবাইল ফোন থেকে তাঁর মেয়ে তাসমিয়া তাহসিন তামান্নার ফোনে একটি কল আসে। এক অজ্ঞাত ব্যক্তি জানান, “তোমার বাবাকে অপহরণ করেছি। যদি জীবিত ফিরে পেতে চাও, তাহলে এনু মিয়ার দোকানের সামনে এনামকে দুই লাখ টাকা দেবে। পুলিশে জানালে মেরে ফেলব।”
এরপর বিকেল ৩টা ১০ মিনিট এবং সন্ধ্যা ৭টা ১৩ মিনিটে আবারও ফোন আসে। ওই সময় অপহরণকারীরা মুক্তিপণের অঙ্ক কমিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে এবং বলেন, টাকা না দিলে ইউনুসের অশ্লীল ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। পরে তাঁকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
অভিযোগে চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—মো. সাকিব (২৪), মো. আকিল (২৩), মো. ইমন (২৩) এবং মো. এনাম (৩৫)। এ ছাড়া আরও ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির জড়িত থাকার কথা বলা হয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, অভিযুক্তদের অনেকেই এলাকায় চাঁদাবাজি, দখল ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা অভিযান চালাই। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোহাম্মদ ইউনুসকে উদ্ধার করা হয়েছে।”
পুলিশের হাতে ইউনুস উদ্ধারের খবরে তাঁর পরিবার কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। তবে এখনো মূল অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হননি।
এমআর