গলাচিপায় ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগ তুলে দুই কিশোরকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় মাছের আড়তদার ইমরান বয়াতি (৩৫)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১১টায় গলাচিপা থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
এর আগে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরমহিরউদ্দিন এলাকায় পাউবোর নতুন স্লুইসগেট বাজারে কিশোর আবদুল্লাহ (১০) ও সাব্বির (১৪)কে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সোমবার সময়ের কন্ঠস্বর পত্রিকার অনলাইনে খবর প্রকাশ পেলে প্রশাসনের নজরে আসে। পরে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা হলে অভিযুক্ত ইমরানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্থানীয়রা ও ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, সোমবার মাছ চুরির অভিযোগে ইমরান বয়াতি দুই কিশোরকে নৌকা থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হাসান সরদার ও ব্যবসায়ী ইমরান তাঁদের হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে মারধর ও রোদে বসিয়ে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে। একপর্যায়ে কিশোরদের হাতে ইলিশ মাছ দিয়ে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয় এবং তা ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ দেখা দেয়।
জানা যায়, ঘটনার সময় খবর পেয়ে কিশোর আবদুল্লাহর নানা শাহজাহান সরদার তাঁদের ছাড়িয়ে আনতে গেলে মাছের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। তিনি প্রতিবাদ করলেও গালিগালাজ করে তাকে। এ সময় নগদ টাকা দিতে না পারায় সাদা কাগজে তাঁর স্বাক্ষর নেন অভিযুক্তরা। পরে দুই কিশোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আবদুল্লাহকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) রাতে শিশু নির্যাতনের অভিযোগে শাহজাহান সরদার বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় ইমরান বয়াতি, হাসান সরদার ও হেলাল খায়ের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
শাহজাহান সরদার বলেন, ঘটনার পর থেকে হাসান সরদার হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা করায় এখন গ্রাম ছাড়া করার ভয় দেখাচ্ছে। আতঙ্কে আমরা এলাকায় যেতে পারছি না।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, চরবিশ্বাস ইউনিয়নে দুই কিশোরকে নির্যাতনের ঘটনায় আবদুল্লাহর নানা শাহজাহান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ওই মামলায় অভিযুক্ত মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এসকে/আরআই