চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ইতিহাসের ‘সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা বাজেট’ অনুমোদন দিয়েছে জাপান সরকার। ২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৯ দশমিক ০৪ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৫৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রতিরক্ষা বাজেটের অনুমোদন করেছে দেশটির মন্ত্রিসভা।
আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এ খসড়া বাজেটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
কিয়োদো নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০২৬ অর্থবছরের এই বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট ব্যয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি চলতি অর্থবছরের ৮ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ইয়েনের প্রতিরক্ষা বরাদ্দকে ছাড়িয়ে গেছে।
২০২৬ অর্থবছরটি জাপানের ৫ বছর মেয়াদি ৪৩ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ২৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রতিরক্ষা শক্তিবৃদ্ধি পরিকল্পনার চতুর্থ বছর। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো দেশটির সামরিক সক্ষমতা আধুনিকীকরণ, বিশেষ করে চীন ও উত্তর কোরিয়ার মতো আঞ্চলিক হুমকি মোকাবিলা করা।
নতুন বাজেটে ‘শিল্ড’ নামের স্তরভিত্তিক উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য ১০০ দশমিক ১ বিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় আকাশ, সমুদ্রপৃষ্ঠ ও পানির নিচে চলাচলকারী যান একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়া আকাশসীমা লঙ্ঘন মোকাবিলায় দীর্ঘ সময় উড্ডয়ন সক্ষম ড্রোন মূল্যায়নের জন্য ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ড্রোন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে জাপান নজরদারি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও জোরদার করতে চায়।
জাপান সরকার মহাকাশ নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে এয়ার সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের নাম পরিবর্তন করে এয়ার অ্যান্ড স্পেস সেলফ-ডিফেন্স ফোর্স করার পরিকল্পনা করেছে। এ উদ্দেশ্যে উপগ্রহে হস্তক্ষেপ শনাক্ত ও নজরদারি সরঞ্জাম কেনার জন্য আরও ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রতিরক্ষা বাজেটে হাইপারসনিক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র সংগ্রহের জন্য ৩০ দশমিক ১ বিলিয়ন ইয়েন বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা জাপানের তথাকথিত ‘কাউন্টার-অ্যাটাক ক্যাপাবিলিটি’ বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হবে।
ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে চীনের সঙ্গে জাপানের উত্তেজনার মধ্যেই এ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি বলেছিলেন, চীনের দ্বারা তাইওয়ানে আক্রমণ হলে তা জাপানের জন্য ‘অস্তিত্ব-হুমকি পূর্ণ পরিস্থিতি’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং জাপান যৌথ আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করবে।
জাপান প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল বেইজিং। শি প্রশাসন চীনা নাগরিকদের জাপান ভ্রমণে সতর্কতা জারি করে এবং জাপান থেকে সামুদ্রিক খাদ্য আমদানির নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালসহ একাধিক কঠোর পদক্ষেপ চীনা সরকার।
এইচএ