পবিত্র যাকাত কেবল একটি ধর্মীয় বিধান নয়, বরং এটি সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের এক শক্তিশালী হাতিয়ার—এই বিশ্বাসকে বাস্তবে রূপান্তর করছেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও মানবিক যোদ্ধা কাজী রিয়াজ রহমান। পরিকল্পিত ও দূরদর্শী যাকাত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তিনি সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনে আনছেন টেকসই পরিবর্তন। তাঁর এই মহতী উদ্যোগের ফলে বহু অভাবী মানুষ আজ ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন স্বপ্ন দেখছে। তিনি প্রমাণ করেছেন, সদিচ্ছা আর সঠিক পরিকল্পনা থাকলে যাকাতের মাধ্যমে সমাজ থেকে চিরতরে দারিদ্র্য দূর করা সম্ভব। তবে এই বিশিষ্ট সমাজসেবক কাজী রিয়াজ রহমান যাকাতের সুফলকে কেবল দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখেন নি, বরং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশেষ করে বর্তমানে চরম সংকটাপন্ন গাজা ও সুদানের মজলুম মানুষের পাশে খাবার, পানি ও জরুরি সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, যাকাত হলো বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর একটি সম্মিলিত শক্তি। তাঁর মতে, সীমানা ছাড়িয়ে এই ভ্রাতৃত্বের শক্তি দিয়ে বর্তমান বিশ্বের যেকোনো বৃহৎ মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলা করা সম্ভব।
আর্তমানবতার সেবায় নিবেদিত এই অদম্য যোদ্ধা কাজী রিয়াজ রহমান চেষ্টা করছেন প্রথাগত যাকাত ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কাজ করার। নিজের এই মানবিক সংগ্রাম সম্পর্কে কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, "যাকাত হলো সম্পদের শুদ্ধিকরণ। এটি কোন দয়া নয় বরং বিত্তবানদের উপর দরিদ্রদের হক। আমরা যদি সঠিকভাবে যাকাতের অর্থ ব্যবহার করি, তবে দেশে কোনো মানুষই ভিক্ষাবৃত্তি করবে না। আমি সেই পরিবর্তনের গল্প তৈরি করতে চাই, যেখানে একজন মানুষ আজ যাকাত নিলেও আগামীকাল সে নিজেই যাকাত দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করবে।”
তিনি বিশ্বাস করেন, কেবল একদিনের খাবার বা কাপড় জোগানো যাকাতের প্রকৃত লক্ষ্য নয়; বরং একজন মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলাই যাকাতের সার্থকতা। সেই লক্ষ্যেই তিনি তাঁর যাকাত তহবিলের মাধ্যমে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, বিধবা নারীদের সেলাই মেশিন প্রদান এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পুঁজি সরবরাহ করছেন।
এছাড়াও যাকাত তহবিল থেকে অসুস্থ মানুষের চিকিৎসাসেবা প্রদানের মাধ্যমে তিনি শতশত মানুষের জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যাকাত কেবল স্থানীয় দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য নয়, বরং যেখানে মুসলিম উম্মাহ চরম বিপদে আছে, সেখানে সহায়তা পাঠানো আমাদের নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব। "গাজা ও সুদানে আমাদের ভাই-বোনেরা আজ খাদ্য, পানীয় জল এবং চিকিৎসার অভাবে ধুঁকছে। যাকাতের একটি অংশ যদি সঠিক উপায়ে আন্তর্জাতিক নির্ভরযোগ্য সংস্থার মাধ্যমে সেখানে পৌঁছানো যায়, তবে তা হবে বর্তমান সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। সীমানা পেরিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা।”
আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত এই মানুষটি ব্যক্তিগত সুখের চেয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোকে বেশি গুরুত্ব দেন। তার বক্তব্য "মানুষ হিসেবে আমাদের সার্থকতা কেবল নিজের সুখের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গাজা থেকে সুদান—যেখানে মানুষের হাহাকার, সেখানেই আমাদের পৌঁছে যাওয়া নৈতিক দায়িত্ব। মানবতার কোনো পাসপোর্ট নেই।”
তরুণ প্রজন্মের প্রতি একটি বিশেষ বার্তা দিয়ে তিনি বলেন "একটি ছোট সদিচ্ছা বড় কোনো পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। আসুন, আমরা মানুষের জন্য মানুষের হাত ধরি এবং একটি বৈষম্যহীন সুন্দর আগামীর পথ তৈরি করি।”