আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ে শহীদ শরীফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।
ইনকিলাম মঞ্চ পাবিপ্রবি শাখার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা থেকে বিকাল পৌনে ৪টা পর্যন্ত মহাসড়কে অবস্থান নেয় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এসময় তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আন্দোলনে অংশ নেয় বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি ও তাদের ছাত্র ও যুবশক্তির নেতাকর্মীরা।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায়। ইনকিলাব মঞ্চ পাবিপ্রবি শাখার ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মজনু আলম বলেন, ‘শরীফ ওসমান হাদি ভাইয়ের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের ন্যায় আমরাও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ইনকিলাব মঞ্চ রাজপথে থেকে যাব। আগামী ছাব্বিশ কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের শরিফ ওসমান হাদি ভাইয়ের হত্যার দ্রুত বিচার, আসামীদের গ্রেফতার এবং বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
ছাত্রশিবির সভাপতি তুষার মাহমুদ বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মাটিতে জুলাই যোদ্ধারা অনিরাপদে ভুগছে, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে কোন কনসার্ন আমরা দেখতে পাই না। এই দেশে যারাই ভারত বিদ্বেষী এবং কালচারাল ফ্যসিস্টদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকেই হত্যার এজেন্ডা নিয়েছে স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ। আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই ভারত বিদ্বেষী আমাদের কখনই কমবে না। এদেশের মানুষ জন্ম থেকেই ভারত বিদ্বেষী হয়ে জন্ম নিবে ইনশাআল্লাহ।’
জাতীয় যুব শক্তির জেলা আহ্বায়ক মো: রাফিউল ইসলাম রাফি বলেন, ‘হাদি মানে আজাদী, হাদি মানে ইনসাফ। এক হাদিকে হত্যা করে আমাদের কণ্ঠকে কখনই রোধ করা যাবে না। এক হাদির রক্ত থেকে আমরা হাজারো হাদি তৈরি হব ইনশাল্লাহ। মৃত্যুর ফয়সালা ওই আসমান থেকে আসে, আমরা মৃত্যুকে পরোয়া করিনা।’
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে জুমার নামাজ শেষে রিকশায় গন্তব্যে ফিরছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। রাজধানীর বিজয়নগর কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে পেছন থেকে আসা এক মোটরসাইকেলের আরোহী কাছ থেকে ওসমান হাদীর মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলি তার মাথার ডান পাশ দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। এর পর মোটর সাইকেলের গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ওসমান হাদীর মাথায় অস্ত্রোপচারসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শেষে একইদিন সন্ধ্যায় তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর ওসমান হাদীকে নেওয়া হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন এই জুলাই বিপ্লবী।
এসএম