বিএনপির চেয়ারপারসন, গণতন্ত্রের মা, তিনবারের সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী ও আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশের মতো কিশোরগঞ্জ জেলাতেও নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। দলের চেয়ারপারসনকে হারিয়ে শোকাহত দলীয় নেতাকর্মীরা। শোক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝেও; বিরাজ করছে শোক ও বেদনাবিধুর পরিবেশ।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গণতন্ত্রকামী এই নেত্রী ইন্তেকাল করেন। এ মহীয়সী নারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে কিশোরগঞ্জ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকেই একে দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে উল্লেখ করেন।
মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনায় মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে সাত দিনব্যাপী কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন আপসহীন নেত্রী। গণতন্ত্রের সংকটকালে তিনি নিঃস্বার্থভাবে ভূমিকা রেখেছেন। এই সংগ্রামী নেত্রীর চলে যাওয়া দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর মৃত্যুতে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সাত দিনব্যাপী কোরআন খতম, দোয়াসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম, সাবেক অর্থনৈতিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু, যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল হক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মারুফ আল মোস্তফা, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম নিশাদ, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন রাজিব, রাফিউল ইসলাম নওশাদ প্রমুখ।
এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, আপসহীন নেত্রী হিসেবে পরিচিত বেগম খালেদা জিয়া দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন অভিভাবককে হারালো, যার শূন্যতা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। এ সময় নেতাকর্মীরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চান। পরে নেতাকর্মীরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করেন। একই সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে কোরআন তিলাওয়াত চলে।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ-১ (সদর ও হোসেনপুর) আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। সকাল থেকে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে শোকাভিভূত নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া ছিলেন জাতীয় রাজনৈতিক সংকটে ঐক্যের প্রতীক, আপসহীন এক গণতন্ত্রকামী ও জনবান্ধব নেত্রী। তাঁর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। মহান আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন—এই দোয়া করি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ নভেম্বর ফুসফুসের সংক্রমণ থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেগম জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তাঁর নিউমোনিয়া দেখা দেয়, সঙ্গে কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের পুরোনো সমস্যাও ছিল। এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।
এনআই