ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিণত হয়েছে মাদক কারবারিদের নিরাপদ ঘাঁটিতে। স্থানীয় রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, সপাতাল চত্বর ও আশপাশে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা চলে, যা জনস্বাস্থ্য ও আইনশৃঙ্খলার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সপাতালের প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। হাসপাতাল এলাকায় আনসার বা নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় কতিপয় অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে মাদকের কারবারি নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
অনেক সময় তারা রোগীর স্বজনের ছদ্মবেশে হাসপাতালের মধ্যে প্রবেশ করছে। এমনকি প্যাথলজি ল্যাব ও কোর্য়াটারের পাশে প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক রোগীর স্বজন জানান, কিশোর ও তরুণদের লক্ষ্য করেই মাদক কারবারিরা সক্রিয়। হাসপাতালের কোর্য়াটারের পাশে প্রকাশ্যে করা হয় লেনদেন।
সূত্র জানায়, হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব সহকারী আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে দীঘীদন হাসপাতাল এলাকায় চলে আসছে মাদকের কারবার। বিকেলের পর থেকে উঠতি বয়সী তরুণেরা মাদকের জন্য ভীড় জমায় হাসপাতালের ভেতরের বিভিন্ন এলাকায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী বলেন, ‘দীঘদিন ধরে আবুল কালামের নেতৃত্বে হাসপাতালের মধ্যে মাদক ব্যবসা চলছে। তাঁর ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে পারে না। সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হাসপাতাল এলাকায় প্রতিনিয়িত চলছে মাদকের কারবার। এ কারণে রাতের বেলায় রোগী ও স্বজনেরা ভয়ের মধ্যে থাকে।
জেলা সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি অনোয়ারুজ্জামান আজাদ বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালের মধ্যে মাদকের কারবার এটা সমাজের জন্য সুখকর নয়। এর সঙ্গে ওই হাসপাতালের যাঁরা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাসপাতাল এলাকায় নজরদারি বাড়াতে হবে। নইলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হবে।’
হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এ ধরণের কয়েকটি ঘটনা শোনার পর গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালকে
মাদকমুক্ত রাখতে আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। আশা করছি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় হাসপাতাল এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান জোরদার করা হবে।’
এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমি এখানে সদ্য যোগদান করেছি। তবে হাসপাতাল প্রশাসন থেকে মাদক কারবারের বিষয়টি আমাকে অবগত করা হয়েছে। আমরা হাসপাতাল এলাকায় গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিগগিরই হাসপাতাল এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করা হবে। আশা করছি শুধু ওই এলাকায় নয় পুরো হরিণাকুন্ডু উপজেলাকে আমরা মাদকমুক্ত করবো।’
আরডি