বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে যখন কুয়াশাভেজা প্রকৃতিতে ফজরের আজান ধ্বনিত হচ্ছিল, এর ঠিক কিছু পরেই মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। পরপরই এলাকায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে গভীর শোক ও আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতি ছিল এক যুগনির্ধারণী বাস্তবতা। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়—এমন মন্তব্য করেন দলের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ভাঙ্গুড়া উপজেলার শরৎনগর বাজারে অবস্থিত উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদের পর থেকেই কার্যালয়ে পবিত্র কোরআন খতম শুরু হয়। এতে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।
উপজেলার সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন সফল প্রধানমন্ত্রীই ছিলেন না, বরং মুসলিম উম্মাহর স্বার্থরক্ষা এবং ইসলামী মূল্যবোধকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অন্যতম এক বাতিঘর। যা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। আল্লাহ যেন তাঁর সব নেক আমল কবুল করেন এবং ভুলত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব প্রভাষক জাফর ইকবাল হিরোক সময়ের কণ্ঠস্বর–কে বলেন, আজ আমরা আমাদের মাকে হারিয়েছি। তিনিই ছিলেন একমাত্র আপসহীন নেত্রী। নানা প্রতিকূলতা, অবরোধ ও দীর্ঘ কারাবন্দী জীবনের মধ্য দিয়েও খালেদা জিয়া দৃঢ়ভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে লড়ে গেছেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন তাঁকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন। এই শোক আমরা সইতে পারছি না। দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা নানা কর্মসূচি পালন করছি। তিনি খালেদা জিয়ার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় ফজরের নামাজের ঠিক পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘আপসহীন’ উপাধিতে ভূষিত বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেন। সর্বশেষ গত ২৩ নভেম্বর তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
এনআই