মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের ইছামতী নদীর তীরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ৫৩১ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালীপূজাকে ঘিরে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে। বিশেষ করে মুসলমানদের ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন হওয়ায় অনেকেই ঘুরতে এসেছেন মেলায়। ফলে কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) থেকে কালীমন্দির প্রাঙ্গনে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালী দেবীর ভক্তরা আসতে শুরু করেছেন।

এ ছাড়া ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকে আসা সাধু-সন্ন্যাসীদের সমাগমে এটি এক অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়। তবে মুল পূজা মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে শ্রী শ্রী মা রক্ষা কালীপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে উৎস্বর্গ অনুষ্ঠান (পাঠা বলিদান) করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মন্দির প্রাঙ্গণে বিশেষ আরতিনৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হবে।

উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর কালীমন্দির প্রাঙ্গণে এ পূজা শুরু হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা হলেও সেখানে সমাগম ঘটেছে সব ধর্মের মানুষের। ফলে এ পূজা সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। বাংলা ৯০১ সন থেকে যাত্রা শুরু হওয়া এ কালীপূজা দেখতে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালী দেবীর ভক্তরা এসেছেন। এ ছাড়া ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল থেকে আসা সাধু-সন্ন্যাসীদের সমাগমে এটি এক অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। পূজা উপলক্ষে ইছামতীরে পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা। শেখরনগর ঋষি সমিতির উদ্যোগে এ মেলায় শতাধিক স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিশুদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, হর্স রেস ও রেলভ্রমণের ব্যবস্থা। পাওয়া যায় গৃহস্থালি কাজের রকমারি জিনিসপত্র।

শেখরনগর কালীমন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র দাস বলেন, কালীপূজা ও মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে। বুধবার ভোর ৫টা থেকে কালীমন্দিরে পাঁঠা বলি শুরু হয়। এ বছর ৪ হাজারের বেশি পাঁঠা বলি দেওয়া হয়েছে।

শেখরনগর ইউপির চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার টুটুল বলেন, ৫০০ বছরের বেশি পুরোনো এ মেলা এ অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে। এক দিনের পূজা হলেও মেলা চলে প্রায় সপ্তাহখানেক। পূজাকে কেন্দ্র করে সব ধর্মের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) আ.ন.ম ইমরান খান বলেন, কালীপূজায় সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ ৩০০ কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার বলেন, ৫৩১ বছরের ঐতিহ্যবাহী শেখরনগর কালী পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে । এতে এখন পর্যন্ত কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এই পূজাকে ঘিরে পোশাক (ইউনিফর্ম) পরা ও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছে। পূজা উদযাপন সুন্দর ও উৎসবমুখর ভাবে করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।