দখল-দূষণে বিপর্যস্ত কক্সবাজারের প্রাণ বাঁকখালী নদীকে রক্ষা করতে শিগগিরই বড় পরিসরের উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজারের বদরমোকাম এলাকায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমরা নদীবন্দর করব, আর কেউ দখল করে অট্টালিকা বানাবে, এটা হতে পারে না। উচ্ছেদে কাজ করবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয় দেখবে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের বিষয়।
পরিদর্শনকালে তাঁর সঙ্গে ছিলেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তারা কস্তুরাঘাট এলাকা ছাড়াও নবনির্মিত কক্সবাজার-খুরুশকুল সেতুসহ আশপাশের অঞ্চল ঘুরে দেখেন।
পরিবেশবিদদের মতে, বাঁকখালী নদী আজ প্রভাবশালী দখলদারদের দৌরাত্ম্যে প্রায় মরে গেছে। নদীর পাড়ে প্রতিদিনই উঠছে পাকা দালান, গড়ে উঠেছে প্রায় হাজারখানেক অবৈধ স্থাপনা। আইনি জটিলতা ও প্রশাসনের দুর্বলতায় দখল প্রক্রিয়া যেন নির্বিঘ্নে চলছেই। ময়লা-আবর্জনায় নদীর তলদেশ ভরাট হওয়ায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, যা শহরের বন্যা ঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলছে।
উপদেষ্টাদের এই সরেজমিন পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এতে অংশ নেবেন জেলা প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে নদীবন্দরের সীমানা পিলার স্থাপন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, ড্রেজিং ও দূষণ রোধসহ নানামুখী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পরিবেশ অধিদপ্তর, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ও বিআইডব্লিউটিএ’র পৃথক প্রতিবেদনে বাঁকখালী নদী দখলের সঙ্গে জড়িত ১৩১ জনকে চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে কস্তুরাঘাট ও খুরুশকুল সেতু ঘিরে ২৩ জন দখলদারের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলা করেছে।
এদিকে, বাঁকখালী নদী পরিদর্শন শেষে সেদিনই উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে সি-ট্রাক চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ৬ নম্বর জেটিঘাট থেকে সি-ট্রাকে করে মহেশখালী গমন করে তিনি সুধী সমাবেশেও অংশ নেন।
এসআর