বর্তমান সময়ে খাবারের প্যাকেটে লেখা লো ফ্যাট, প্রাকৃতিক, মাল্টিগ্রেইন, চিনি মুক্ত—এসব শব্দ দেখে অনেকেই নিশ্চিন্ত হন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র এই লেবেল দেখে খাবার বেছে নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিস রয়েছে। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাবারের প্রকৃত উপাদান জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ময়দা দিয়ে তৈরি পিৎজা, বার্গার বান, নান বা ব্রেড শরীরে খুব দ্রুত চিনিতে রূপান্তরিত হয়, ফলে রক্তে শর্করা দ্রুত বেড়ে যায়।
তাই এর বদলে মাল্টিগ্রেইন বা গোটা শস্যের রুটি ও ব্রেড খাওয়া ভালো। মিষ্টি দইকেও অনেকেই স্বাস্থ্যকর ভাবেন, কিন্তু এতে প্রচুর চিনি থাকে। এর পরিবর্তে সাদা দই বা গ্রিক দই নিয়ে তাতে ফল বা একটু দারুচিনি মেশানো স্বাস্থ্যকর বিকল্প। একইভাবে, ফলের রসেও ফাইবার থাকে না।
এতে শুধু ফ্রুক্টোজ থেকে যায়, যা রক্তে শর্করা বাড়াতে পারে। এ ছাড়া কলা, মধু বা মিষ্টি দুধ দিয়ে তৈরি স্মুদি আরো ক্ষতিকর হতে পারে। তাই জুসের বদলে আস্ত ফল খাওয়াই ভালো।
সকালের নাশতায় জনপ্রিয় কর্নফ্লেক্স, চকলেট সিরিয়াল বা গ্র্যানোলা বারেও থাকে প্রচুর পরিশোধিত চিনি ও কার্বোহাইড্রেট। এর বদলে ডালিয়া, ওটস, পোহা বা উপমার মতো দেশি এবং কম চিনিযুক্ত খাবার বেছে নেওয়া উচিত।
শিঙারা, পাকোড়া, চিপস ও প্যাকেটজাত স্ন্যাকস তেল, কার্বস ও লবণে ভরপুর। এর পরিবর্তে ভাজা ছোলা, বাদাম বা এয়ার-ফ্রাইড স্ন্যাকস ভালো বিকল্প। চিনি-মুক্ত লেখা বিস্কুট বা মিষ্টিতেও চিনি অ্যালকোহল থাকতে পারে, যা রক্তে শর্করা বাড়ায় এবং পেটের সমস্যা তৈরি করে। তাই বাড়িতে খেজুর, নারকেল বা বাদাম দিয়ে তৈরি মিষ্টি বেশি উপকারী।
পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুধ, চিজ বা পনিরে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বাড়াতে পারে। এর বদলে স্কিমড দুধ বা লো-ফ্যাট পনির খাওয়া ভালো।
সাদা চালও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। তাই ব্রাউন রাইস, বাজরা, জোয়ার বা কুইনোয়ার মতো শস্য ব্যবহার করা উচিত।
কেক, পেস্ট্রি ও বেকারি পণ্যে চিনি, ময়দা ও ট্রান্স ফ্যাট থাকে। যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এর বদলে ডার্ক চকলেট বা ওটস-বাদাম দিয়ে তৈরি ঘরোয়া মিষ্টিই নিরাপদ।
সূত্র: এবিপি
এবি