রাজশাহীর বাগমারায় একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গোপনে সরকারি বই বিক্রির চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ভাঙড়ি ব্যবসায়ীর কাছে বই বিক্রির সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে আটক করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ফরিদুল ইসলাম উপজেলার কুমারপুর আরজানিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরের পর অধ্যক্ষ ফরিদুল ইসলাম কয়েক বস্তা পুরাতন বই মাদ্রাসা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে দ্বীপপুর এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে তিনি ভাঙড়ি ব্যবসায়ীর কাছে বই ও কিছু খাতাপত্র পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রির চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় কয়েকজন বিষয়টি লক্ষ্য করে সরকারি বই কেন বিক্রি করা হচ্ছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি। পরে স্থানীয়রা মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের একাডেমিক সুপারভাইজার ঘটনাস্থলে যান। তিনি বস্তাভর্তি বই বিক্রির চেষ্টার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে বইগুলো মাদ্রাসায় ফেরত নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি নুরতাজ হোসেন বলেন, সরকারি বই বিক্রির বিষয়ে তাঁদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেওয়া হয়নি। গোপনে পাঁচ কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে বই বিক্রির চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি অভিযুক্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসায় বই রাখার জায়গা না থাকায় পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রির উদ্দেশ্যে বইগুলো নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে বাধার কারণে বিক্রি করতে পারেননি। অনুমতি ছাড়া বই বিক্রির চেষ্টা করা ঠিক হয়নি বলেও তিনি স্বীকার করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার ড. মুহাম্মদ আবদুল মুমীত বলেন, সরেজমিন তদন্তে বস্তাভর্তি পুরাতন বই বিক্রির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বইগুলো ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের। অনেক বই ছেঁড়া হলেও প্রশাসন বা মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি ছাড়া এসব বই বিক্রি করার সুযোগ নেই। এ কারণে অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনআই