ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় সংঘটিত বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে দক্ষিণ থানা পুলিশ।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মিজান সাংবাদিকদের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে হাসনাবাদ হাউজিং এলাকায় একটি মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের সংবাদ পায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পায়, মাদ্রাসার দুটি কক্ষের দেয়াল ও ছাদের অংশবিশেষ বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, শেখ আল আমিন (৩২) নামের এক ব্যক্তি ২০২২ সাল থেকে ভবনটির দুটি কক্ষে ভাড়া নিয়ে আবাসিকভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছিলেন। সেখানে আনুমানিক ২৫–৩০ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়ন করত। অপর দুটি কক্ষে তিনি স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করতেন। শেখ আল আমিনের স্থায়ী ঠিকানা: সারুলিয়া স্কুল রোড, গাবতলী বাজার, থানা মোহরাহাট, জেলা বাগেরহাট।
স্থানীয়দের কাছে জানা যায়, ঘটনার একদিন আগে শেখ আল আমিনের স্ত্রী সন্তান প্রসব করেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় আব্দুর রহমান (২১) গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে স্থানীয় আল-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে রাসায়নিক দ্রব্যাদি, চারটি ককটেল সদৃশ বস্তু, একটি ল্যাপটপ এবং দুটি মনিটর উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট, এন্টি-টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ)সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং তদন্তে অংশ নেয়।
এ ঘটনায় শেখ আল আমিনের স্ত্রী আখিয়া (২৮) — পিতা ইউনুছ মোল্লা, মাতা কুলসুম বেগম — কে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। অধিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আখিয়ার ভাবি ইসমিন আক্তার (৩০) এবং খাতুন আসমা (৩৪)কে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে খাতুন আসমাকে ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ঢাকার বাসাবো থানাধীন নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, পলাতক শেখ আল আমিন ২০১৭ ও ২০২০ সালে একাধিকবার গ্রেফতার হন এবং তার বিরুদ্ধে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন থানায় মোট সাতটি মামলা রয়েছে। একইভাবে গ্রেফতারকৃত খাতুন আসমার বিরুদ্ধেও দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এনআই