সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি)। এতে করে জোটের শরিক দলের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০টিতে।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান জোটের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে আটটি দল একসঙ্গে ছিল। পরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপি আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন আসনে জোটগত সমঝোতা হয়েছে। আরও কয়েকটি দল সমঝোতায় আগ্রহ দেখালেও এই মুহূর্তে তা সম্ভব হচ্ছে না।’
জোটগত আসন সমঝোতার অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও–বোয়ালখালী) আসনে জামায়াত-এনসিপিসহ ১০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও চট্টগ্রাম অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল হাসান আরিফ।
এছাড়া, বান্দরবান (৩০০) আসনে জামায়াত-এনসিপিসহ ১০ দলীয় জোটের মনোনীত প্রার্থী হয়েছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম সূজা উদ্দীন।
সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) জোটের মনোনয়ন প্রসঙ্গে জোবাইরুল হাসান আরিফ ও এ এস এম সূজা উদ্দীনের কাছে জানতে চাইলে তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এ বিষয়ে জোবাইরুল হাসান আরিফ সময়রে কণ্ঠস্বরকে বলেন, ‘দলের জোটগত সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি এই আসনেই নির্বাচনের প্রার্থী।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-৮ আসনে এনসিপি আগেই জোবাইরুল হাসান আরিফের নাম ঘোষণা করেছিল। এই আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী ছিলেন ডা. মুহাম্মদ আবু নাছের। জোটগত সমঝোতার কারণে তাকে এই আসনটি ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ এস এম সূজা উদ্দীন প্রাথমিকভাবে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী–কুতুবদিয়া) আসন হতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও জোটগত সমঝোতায় তাকে বান্দরবান (৩০০) আসনে প্রার্থী করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার-২ (মহেশখালী–কুতুবদিয়া) আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ আগে থেকেই জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনি প্রচারনা চালিয়ে আসছিলেন।
জোটগত নির্বাচনের বিষয়ে জানতে চাইলে এ এস এম সূজা উদ্দীন বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত যা হবে সেটাই চূড়ান্ত।’
তবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান আসনে (৩০০ নম্বর) প্রার্থী ঘোষণা করেছিলো জামায়াতে ইসলামী। এই আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিলো জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আবুল কালাম-এর। তবে জোটগত সমঝোতায় এই আসন তাকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে এ এস এম সূজা উদ্দীন কাছে।
গণ-অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে জামায়াতের সঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)—এই ছয়টি দল আসন সমঝোতার ভিত্তিতে সব আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার আলোচনা শুরু করে। পরে এতে যুক্ত হয় বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। জামায়াতসহ এই আটটি দল দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দাবিতে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে সক্রিয় ছিল। নতুন করে এনসিপি ও এলডিপি যুক্ত হওয়ায় জামায়াতের নেতৃত্বাধীন জোটটি এখন ১০ দলীয় জোটে পরিণত হয়েছে।
এসএম