তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ও হাড়কাঁপানো কনকনে শীতে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, তখন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হতদরিদ্রদের হৃদয়ে উষ্ণতা ছড়াচ্ছেন সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত সিদ্দিকী। গত দুই দিন ধরে রাতের অন্ধকারে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই তিনি ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কম্বল পৌঁছে দিচ্ছেন। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মানুষের নজর কাড়ছে।
সাধারণত সরকারি সহায়তা বিতরণের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজন করা হলেও, ইউএনও আরাফাত সিদ্দিকী বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। রাতের নিস্তব্ধতায় তিনি বাসস্ট্যান্ড, ফুটপাত এবং প্রত্যন্ত গ্রামের জরাজীর্ণ কুঁড়েঘরে ছুটে যাচ্ছেন। যেখানে অসহায় মানুষ শীতের তীব্রতায় খড়কুটো জ্বালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন, ঠিক সেখানেই পরম মমতায় শীতবস্ত্র নিয়ে হাজির হচ্ছেন এই কর্মকর্তা।
পৌর এলাকার এক রিকশাচালক আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “রাইতের বেলা আমাদের মতো গরিবের খবর কেউ রাখে না। হঠাৎ দেখি একজন সাহেব এসে গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিল। পরে শুনলাম উনি আমাদের নতুন ইউএনও সাহেব। উনার মতো দরদী মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়।”
স্থানীয়রা জানান, যোগদানের পর থেকেই তিনি সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কনকনে শীতের রাতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তার এভাবে সাধারণ হতদরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইউএনও আরাফাত সিদ্দিকী বলেন, “এটি আমার দায়িত্বের একটি অংশ মাত্র। এই প্রচণ্ড শীতে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো খুব কষ্টে আছে। সরকারের দেওয়া এই উপহারগুলো প্রকৃত হকদারদের কাছে পৌঁছে দিতেই আমি রাতে বের হচ্ছি। মানুষের মুখে হাসি দেখতে পারাটা আমার সবচেয়ে বড় তৃপ্তি।”
এনআই