গরমের শুরুতেই পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) আবাসিক হলসহ ক্যাম্পাসজুড়ে মশার ব্যাপক উপদ্রবে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল গড়ালেই হলে কিংবা ক্যাম্পাসের খোলা জায়গায় বসে থাকাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। মশা নিধনে ব্যবহারের জন্য নেই আধুনিক ফগার মেশিনের সুবিধা।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিভিন্ন হল ঘুরে দেখা যায়, মশার অত্যাচারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান হল ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, নিয়মিত মশা নিধনের স্প্রে করা হয় না। এছাড়া হলের ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা এবং ক্যাম্পাসে ময়লা-আবর্জনা সরাতে দীর্ঘসূত্রিতার ফলে মশার বংশ বিস্তার বাড়ছে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, শুধু আবাসিক হল নয়, পুরো ক্যাম্পাসেই সন্ধ্যার পর মশার উৎপাত বেড়ে যায়। আড্ডারত অবস্থায় বা ঘোরাঘুরি করতে গেলেও সঙ্গে রাখতে হয় মশার কয়েল। এতে কয়েলের ধোঁয়া থেকে আবার শারীরিক অস্বস্তিও তৈরি হচ্ছে।
শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ আলিফ বলেন, "ক্যাম্পাসে ও হলে মশার উপদ্রব এতটাই ভয়াবহ যে দিনের বেলাতেও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রশাসন থেকে স্প্রে করার নির্দেশনা থাকলেও তা সময়মতো কার্যকর হচ্ছে না। নিচতলার শিক্ষার্থীদের ওপর উপরতলা থেকে ময়লা ফেলা হওয়ায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে গরমে ডেঙ্গু প্রকোপ মারাত্মক আকার নিতে পারে।"
শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী অনন্যা ইসলাম জেমি বলেন, "হলে মশার উপদ্রব এত বেশি যে, মশারির ভেতর হাত ছোঁয়া থাকলেও মশা কামড়ে দেয়। কয়েল ব্যবহারে কোনো সুরাহা হচ্ছে না। দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না হলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর ঝুঁকি বাড়বে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, দ্রুত কার্যকর মশা নিধন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।"
এ প্রসঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট আমিরুল ইসলাম বলেন, "মশা নিধনে ফগার মেশিনের মাধ্যমে ঔষধ ছিটানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি হলের ড্রেন পরিষ্কার ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য এস্টেট শাখাকে অবহিত করা হবে। এই সপ্তাহেই ড্রেনগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।"
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. রাশেদুল হক জানান, "ক্যাম্পাসে ব্যবহৃত ছোট ফগার মেশিনের পরিবর্তে একটি বড় অত্যাধুনিক মেশিনের প্রয়োজন। বর্তমানে মশা নিধনের কীটনাশকও ফুরিয়ে গেছে। আগামীকাল এস্টেট শাখাকে প্রয়োজনীয় মেশিন ও ডকুমেন্ট হস্তান্তরের বিষয়টি জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
এনআই