নাফিজা সালাহু, ২৪ বছর বয়সী এই তরুণী এতটাই সংকটপন্ন অবস্থায় ছিলেন যে, তিনি নাইজেরিয়ায় আরেকটি পরিসংখ্যানের অংশ হয়ে উঠতে যাচ্ছিলেন। যেখানে প্রতি সাত মিনিটে সন্তান প্রসব করতে অন্তত একজন নারী মারা যায়। খবর বিবিসি
ডাক্তারদের ধর্মঘটের সময় হাসপাতালে থাকা অবস্থায় তার প্রসব বেদনা উঠলেও কোনো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের সেবা পায়নি। প্রসবের সময় শিশুর মাথা আটকে গেলেও তাকে চুপ করে শুয়ে থাকতে বলা হয়। এভাবে সে তিনদিন ছিল। এক পর্যায়ে তাকে সিজারের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে একজন ডাক্তারেও খোঁজ মিলে, যিনি সিজার করানোর জন্য রাজি হয়েছিলেন।
দেশটির উত্তরের কানো রাজ্য থেকে সালাহু বিবিসিকে বলেন, ‘আল্লাহ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কারণ আমার কোনো শক্তি অবশিষ্ট ছিল না।’
সালাহু ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরলেও তার শিশুটি বাঁচেনি। দীর্ঘ ১১ বছর পর সে আরও কয়েকবার ওই হাসপাতালে সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য গিয়েছিলেন। তবে তিনি সেখানে মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়েই গিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমি জানতাম (প্রতিবারই) জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকতে হয়েছে। ফলে আর ভয় পেতাম না।
সালাহুর অভিজ্ঞতা অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। কারণ নাইজেরিয়া হলো সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে দেশটিতে সন্তান প্রসব করতে গিয়ে প্রতি ১০০ জন নারীর মধ্যে একজন নারী সঙ্গে সঙ্গে অথবা কয়েক দিনের মধ্যেই মারা যায়। পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়েছে, সন্তান জম্ম দিতে গিয়ে ওই বছর বিশ্বব্যাপী যত নারীর মৃত্যু হয়েছে তার ২৯ শতাংশ ছিল নাইজেরিয়াতে।
দেশটিতে প্রতি বছর অন্তত ৭৫ হাজার নারী সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যায়। যার অর্থ দাঁড়ায় প্রতি সাত মিনিটে একজন করে মরে যাচ্ছে।
জাতিসংঘের শিশু বিষয় সংস্থা ইউনিসেফের নাইজেরিয়ান অফিসের কর্মকর্তা মার্টিন ডলস্টেন বলেন, মাতৃ মৃত্যুর হার নাইজেরিয়াতে অনেক বেশি। একাধিক কারণে এমনটি ঘটে।
এবি