এইমাত্র
  • আরও দুই নেতাকে সুখবর দিল বিএনপি
  • পুলিশকে অত্যন্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ
  • আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কঠোর হচ্ছে ইউরোপ, না ছাড়লে হবে জেল
  • চীনের কাছে ভারতীয়দের নিশানা না করার আশ্বাস চায় ভারত
  • জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি
  • জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর সুনামির আঘাত
  • নাগরিকদের চীন ভ্রমণ নিয়ে সতর্কতা জারি ভারতের
  • বিশ্বরেকর্ড গড়ার প্রত্যয়ে বিজয় দিবসে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং
  • ফেইসবুক পোস্টে কমেন্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ৫
  • জুনিয়র হকি বিশ্বকাপের চ্যালেঞ্জার ট্রফি বাংলাদেশের
  • আজ মঙ্গলবার, ২৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    রাত হলেই দপদপিয়া সেতুটি হয়ে ওঠে ‘ভূতের রাজ্য’

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:০১ এএম
    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:০১ এএম

    রাত হলেই দপদপিয়া সেতুটি হয়ে ওঠে ‘ভূতের রাজ্য’

    আরিফ হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (বরিশাল) প্রকাশ: ৬ আগস্ট ২০২৫, ১১:০১ এএম

    দীর্ঘ দিন ধরে রাতে জ্বলছে না বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর ওপর নির্মিত দপদপিয়া সেতুর বৈদ্যুতিক বাতিগুলো। ফলে সন্ধ্যার পর থেকে অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়া সেতু এলাকায় মাদক কারবারিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।

    দপদপিয়া সেতুর সড়ক বাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। সন্ধ্যা নামলেই সেতুর ওপর বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। মাঝেমধ্যেই ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনাও। এই সেতুটির সৌন্দর্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন শত শত লোকজন আসতেন। এই সেতু ঘিরে বিনোদন কেন্দ্রের মতো পরিণত হতো। কিন্তু বর্তমানে সেতুটিতে স্থাপন করা বৈদ্যুতিক বাতিগুলো নষ্ট থাকার কারণে অন্ধকারে ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

    সরেজমিন বুধবার (০৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেতুর উভয় পাশের বাতিগুলো অনেক দিন ধরে নষ্ট। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে সেতু এলাকায় অন্ধকারে ভূতুড়ে স্থানে পরিণত হয়। শুরু হয় মাদকসেবীদের উৎপাত। আনন্দের নামে কিছু তরুণ সেতুর ওপর একত্রিত হয়ে গাঁজা সেবনে ব্যস্ত থাকে।

    ২০১১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কীর্তনখোলা নদীর ওপর নির্মিত দপদপিয়া সেতু খুলে দেওয়া হয়। পরে এটি যানবাহন চলাচল থেকে শুরু করে বিনোদন স্পটে পরিণত হয়।

    বর্তমানে সেতুটিতে লোহার পাত থাকার স্থানটিও রয়েছে ফাঁকা। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন যানবাহনের চালকরা। আর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, বিষয়টি তাদের নজরে আসেনি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে মেরামত করা হবে।

    এদিকে সচেতন মহল বলছেন, সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে দক্ষিণপ্রান্তের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুটিতে রাতের বেলা যানবাহন চলাচল দিন দিন ক্রমশই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

    সেতুটি ১৩৪টি লাইটপোস্টের সকল বাতি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকার কারণে যেকোনো সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

    সেতু পাশের বাসিন্দা ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, বিষয়টি সম্পর্কে সড়ক ও জনপদ কর্তৃপক্ষ অবহিত থাকলেও কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না তারা। এমনকি সেতু ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করা হলে তাতেও কোনো সুফল আসছে না। ফলে রাতের বেলা সেতুটির পরিবেশ ভূতুরে বলে অভিযোগ করেন তারা।

    সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা গেছে, পুরো সেতু জুড়ে কোনো বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহ নেই। সন্ধ্যার অন্ধকার নামার পর দপদপিয়া সেতু থেকে চলাচলকারী জনসাধারণ আতঙ্ক নিয়েই চলাফেরা করতে বাধ্য হচ্ছেন।

    স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, আলো না থাকার সুযোগে সেতুর ওপর জমায়েত ঘটে আশেপাশের এলাকার অন্ধকার থাকার ঝামেলা মুক্ত স্থান হয়ে উঠে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী চক্রের। তাছাড়া পুলিশেরও কোনো নজরদারি না থাকার কারণে রাতের আঁধারে সেতু এলাকায় এক শ্রেণির বখাটে ও ছিনতাইকারীর স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়।

    যার ফলে দপদপিয়া সেতুতে ঘুরতে আসা বিনোদন পিয়াসীরা পায়ে হেঁটে সেতু পার হলে অথবা কেউ ছোট যানবাহনে (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, টেম্পু ও মোটরসাইকেল) যাতায়াত করলে তাদের সর্বস্ব লুটে নেওয়ারও ঘটনা ঘটে মাঝে মাঝে।

    সূত্রমতে, সড়ক পথে বরিশাল-ঝালকাঠি-নলছিটি-পটুয়াখালী-কুয়াকাটাসহ পাঁচ জেলার গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পটে যাতায়াতের পথ দপদপিয়া সেতুতে বৈদ্যুতিক আলোহীন ঘুটঘুটে অন্ধকার বিরাজ করায় সাধারণ পথচারীরা গাড়ির নিচে চাপা পড়ে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে।

    একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আড়াই বছর আগে দপদপিয়া সেতুর বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করে প্রায় আড়াই লাখ টাকার বৈদ্যুতিক তার চুরি করে নিয়েছে সংঘবদ্ধ চোরচক্র। এরপর থেকে বৈদ্যুতিক লাইনবিহীন সবগুলো লাইটপোস্টের আলো সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

    বিষয়টি সম্পর্কে সওজ কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়ার পর বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর (সাহেবেরহাট) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করলেও সেতুতে আলো দিতে আর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি এখন পর্যন্ত।

    পরবর্তীতে সওজ বিভাগ থেকে আলাদা লাইন টেনে মাত্র ৩০টি লাইট পোস্টে আলো সরবরাহের ব্যবস্থা করা হলেও কিছুদিন যেতে না যেতে অস্থায়ী লাইটগুলিও পুনরায় বিকল হয়ে যায়।

    দপদপিয়া সেতুতে টোল আদায়ে নিয়োজিত রায়হান বলেন, আমরা দপদপিয়া সেতুর ইজারা নিলেও রক্ষণাবেক্ষণ কিংবা সংস্কারের দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগের।

    অভিযোগ আকারে রায়হান বলেন, এই সেতু দিয়ে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব আয় করলেও টোল আদায়ের জন্য স্থায়ী কোনো টোলঘর বা টোল আদায়কারীসহ সাধারণ যাতায়াতকারী নারী-পুরুষের ব্যবহারের জন্য সামান্য একটি বাথরুম পর্যন্ত করা হয়নি। তাই যাত্রীদের মতো আমরাও নানা দুর্ভোগ নিয়ে কাজ করছি।

    এব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল কিন্তু সেতুতে আলো ব্যবস্থা করতে যে সরঞ্জাম প্রয়োজন তা তাদের নেই।

    তাছাড়া পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকার কারণে ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তবে ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে খুব শীঘ্রই বিকল্পভাবে আলোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

    এআই

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…