এইমাত্র
  • কিছুটা ‍কমেছে সবজির দাম, চড়া তেল-পেঁয়াজ
  • মুক্ত হয় উত্তর-পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা
  • ঝিনাইদহে নসিমন চালককে কুপিয়ে হত্যা
  • দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আভাস
  • যশোরে পোষা কুকুর-বিড়ালে আক্রান্ত বাড়ছে, টিকা সংকট
  • সব ঠিক থাকলে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়া হবে রোববার
  • নওগাঁয় মাদকসহ ১ জন গ্রেপ্তার
  • বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে অগ্নিসংযোগ-বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ
  • নোয়াখালী প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া
  • ঢাকার পথে ডা. জুবাইদা রহমান
  • আজ শুক্রবার, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    দেশজুড়ে

    চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১

    দুর্নীতির লোডশেডিং নেই, চলছে ফুল ভোল্টেজে!

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম
    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

    দুর্নীতির লোডশেডিং নেই, চলছে ফুল ভোল্টেজে!

    মো. জাহেদুল ইসলাম, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৪ পিএম

    চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর সাতকানিয়া জোনাল অফিসের কর্মকর্তা জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে চরম অনিয়ম–দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে মিটার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, মিটার–বিল দেওয়া–নেওয়া, বিল কপি সংশোধনের নামে গ্রাহক হয়রানিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগকারীরা ওই কর্মচারীর চরম অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করার পরেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। তিনি বিগত স্বৈরাচার আমলে যা করে গেছেন, এখনো তা বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নতুন সংযোগের জন্য ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানকে প্রতি মিটারে নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ টাকা না দিলে দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা হয় নতুন সংযোগের প্রস্তাব।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রি বলেন, ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানের প্রতিটি ইউনিয়নে কিছু নিজস্ব লোক রয়েছে। তাদের মাধ্যমে জিল্লুর রহমান টাকা সংগ্রহ করেন। কোনো সাধারণ মানুষ নতুন সংযোগের জন্য অফিসে গেলেই প্রথমে জিল্লুরের সাথে কথা বলতে হয়। এরপর শুরু হয় টাকা দাবির কাহিনী। তাদের নির্দিষ্ট কিছু বোর্ড–অনুমোদিত ইলেকট্রিশিয়ান রয়েছে—কেউ সার্ভিসের জন্য গেলে জিল্লুর ওই ইলেকট্রিশিয়ানের সাথে কথা বলতে বলেন। তখন ইলেকট্রিশিয়ানরা নতুন একটি মিটার সংযোগের সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। যেখানে সরকারি নির্ধারিত খরচ প্রতি কিলোওয়াট ৪৮০ টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা—সেখানে নেওয়া হচ্ছে চার–পাঁচ হাজার টাকা। আর সেই টাকা থেকেই নির্দিষ্ট একটি অংশ যায় জিল্লুর রহমানের পকেটে। এভাবে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

    এওচিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ওয়াহিদারপাড়া এলাকার শামসুর আলম বলেন, আমার পরিবারে আরও একটি মিটার প্রয়োজন হওয়ায় আমি নতুন সংযোগের জন্য সাতকানিয়া জোনাল অফিসে যাই। অফিসের সামনে থাকা এক মুরব্বী ইলেকট্রিশিয়ানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কাগজপত্র দেখে জানান—এই সংযোগ সম্পন্ন করতে সরকারি খরচসহ সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে হবে। অথচ সরকারি খরচ মাত্র ৪৮০ টাকা। এরপর অফিসের ডিজিএম–এর সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানের সাথে কথা বলতে বলেন। কাগজপত্র দেখে ওয়ারিং পরিদর্শনের জন্য যাতায়াত খরচ এক হাজার টাকা বলা হয়। তখন জিল্লুর রহমান বলে ওঠেন—এক হাজার টাকা কমই বলা হয়েছে, আরও বেশি নেওয়া উচিত ছিল। অর্থাৎ তাঁর নেতৃত্বে ইলেকট্রিশিয়ানদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এভাবে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষ যদি তাদের কাছে জিম্মি হতে থাকে—মানুষ যাবে কোথায়?

    ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য না করে এ প্রতিবেদককে অফিসে গিয়ে তার সাথে দেখা করার কথা বলেন।

    সাতকানিয়া জোনাল অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘদিন যাবত ওয়ারিং ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানের অনিয়মের অভিযোগ আসছে। এতে অফিসের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমরা তাঁর সব অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি।

    সাতকানিয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের কোনো কর্মকর্তা যদি সরকারি নির্ধারিত ফির বাইরে নতুন সংযোগ, মিটার ওয়্যারিং পরিদর্শন বা যাতায়াত খরচের নামে টাকা দাবি করে—এটা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রবিরোধী ও আইনবহির্ভূত। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবো।

    চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী দিলীপ চন্দ্র চৌধুরী বলেন, তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ঢাকায় থেকে তদন্ত চলছে। অন্যায়কারী যত বড়ই শক্তিশালী হোক না কেন—সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    এফএস

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…