এইমাত্র
  • ঝিনাইদহে নসিমন চালককে কুপিয়ে হত্যা
  • দেশে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের আভাস
  • যশোরে পোষা কুকুর-বিড়ালে আক্রান্ত বাড়ছে, টিকা সংকট
  • সব ঠিক থাকলে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়া হবে রোববার
  • নওগাঁয় মাদকসহ ১ জন গ্রেপ্তার
  • বিএনপির মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে অগ্নিসংযোগ-বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ
  • নোয়াখালী প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া
  • ঢাকার পথে ডা. জুবাইদা রহমান
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবর্তন নবান্ন উৎসব-১৪৩২ উদযাপন
  • জামালপুরে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল চাচা-ভাতিজার
  • আজ শুক্রবার, ২১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ | ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
    কৃষি ও প্রকৃতি

    ‘ফুলের রাজ্য’ গদখালী

    ‘টিউলিপে’ নতুন সম্ভাবনা

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম
    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

    ‘টিউলিপে’ নতুন সম্ভাবনা

    মো. জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৩২ পিএম

    শীতের আগমনী হাওয়ায় আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে ফুলের রাজ্য খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালী ও পানিসারা অঞ্চল। মাঠে মাঠে রঙিন ফুলের চারা, কুয়াশা ভেদ করে ব্যস্ত চাষিরা ব্যস্ত চাষে, চারদিকে ছড়িয়ে আছে ফুলের গন্ধ আর উৎসবের আমেজ। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত যে মৌসুমকে বলা হয় ফুলের ভরা সময়, তার প্রস্তুুতি এখন পুরোদমে চলছে। সব মিলিয়ে শীতের শুরুতেই আবারও রঙে রঙে ভরে উঠছে গদখালী। মাঠজুড়ে ফুটতে শুরু করেছে নতুন আশার ফুল, যার মাঝে টিউলিপের পাপড়িও হয়তো লিখে দেবে বাংলাদেশের ফুলচাষে এক নতুন অধ্যায়।

    চাষিরা এখন সকাল-সন্ধ্যা ব্যস্ত বীজতলা তৈরিতে, জমিতে সেচ ও পরিচর্যায়। আগাছা নিড়ানো, স্প্রে করা, মরা গাছ তুলে ফেলা সব মিলিয়ে ফুলের মৌসুমকে সামনে রেখে চলছে পরিশ্রমের প্রতিযোগিতা। কারণ, আসন্ন বিজয় দিবস, নববর্ষ, বসন্তবরণ ও ভালোবাসা ও শহীদ দিবসের বাজার ধরাই এখন তাদের মূল লক্ষ্য।

    এবারের মৌসুমে গদখালীর মাঠে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গোলাপ, গাঁদা, জারবেরা, জিপসি ও চন্দ্রমল্লিকার পাশাপাশি পরীক্ষামূলকভাবে টিউলিপ চাষ করে চমক দেখিয়েছেন কয়েকজন চাষি।

    ফুলের রাজধানীখ্যাত গদখালী, নাভারন, পানিসারা ও মাগুরা ইউনিয়নের একাংশ বাণিজ্যিক ফুল চাষের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। দেশের বৃহত্তম ফুল উৎপাদক যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার উৎপাদিত মানসম্মত ফুল বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে প্রতিদিনই সরবরাহ হয়। দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ ফুল সরবরাহ হয় গদখালী থেকে।

    এখানকার উৎপাদিত ফুল ইউরোপের পাঁচটি দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। রং বেরঙের গোলাপ, গ্লাডিওলাস, জারবেরা, রজনীগন্ধাসহ নানা জাতের ফুল রপ্তানি হয়ে থাকে। ফুল উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছেন এ গ্রামীণ জনপদের ফুল চাষিরা। নিজেরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী, কৃষিজীবী পরিবার ও জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান ফুল চাষে। ফুলের উৎপাদন মৌসুম শুরুতে এ জনপদের ফুল চাষীদের নাওয়া খাওয়ার ফুরসৎ নেই, দিনরাত ফুলের ক্ষেত পরিচর্যার পাশাপাশি নতুন বীজ তলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার ফুল চাষিরা।

    টিউলিপ চাষী ইসমাইল হোসেন জানান, টিউলিপ মূলত শীত প্রধান অঞ্চলের ফুল চাষে সাধারণত ৫ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এমন আবহাওয়া বাংলাদেশে বিরল হলেও, গদখালীর অনুকূল মাটি ও শীতকালের হালকা ঠান্ডা এই ফুল চাষে আশাব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছে।

    এদিকে, ফুলের ভরা মৌসুম সামনে রেখে বাজারেও শুরু হয়েছে সরব প্রস্তুুতি। গদখালী ফুলবাজারে প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে কোটি টাকার ফুল। পাইকাররা আসছেন দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে। গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫ টাকা দরে, রজনীগন্ধা ৬ টাকা, গ্লাডওলাস, ১২-১৫ টাকা, আর জারবেরা ১২-১৪ টাকায়।

    গদখালি ফুল চাষি কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, ‘যশোর অঞ্চলে প্রায় ৭ হাজার ফুলচাষি ১২ শতাধিক হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করেন। দেশের মোট ফুলের চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগই সরবরাহ হয় এখান থেকে। চলতি বছরের গ্রীষ্মে অতিবৃষ্টি ও তীব্র গরমে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিদের মনে নতুন আশার আলো। তারা বলছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এই মৌসুমে শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের নানা জাতের ফুল দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।’

    স্থানীয় কৃষিবিদরা বলছেন, ‘দেশে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষের সম্ভাবনা যাচাইয়ে গদখালী হতে পারে নতুন দিগন্তের সূচনা।’

    ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ৬৪০ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছে। এখন এখানে বিদেশি কিছু ফুলও পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে। এই ফুলচাষের সঙ্গে প্রায় এক হাজার কৃষক এবং ৫০ হাজারের বেশি শ্রমিক সরাসরিযুক্ত। বছরে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার ফুলের লেনদেন হয় এই অঞ্চলে। কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি, যাতে ফুলের বাগানের পরিধি দিন দিন আরও বাড়ে।’

    ইখা

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    চলতি সপ্তাহে সর্বাধিক পঠিত

    Loading…