বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের নিম্নআয়ের তরুণ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য ১৫০.৭৫ মিলিয়ন ডলার (১৫ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার) অতিরিক্ত অর্থায়ন অনুমোদন দিয়েছে। এই অর্থায়ন বিশেষভাবে নারী এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।
আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস জানিয়েছে, এই অর্থায়ন ‘রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অফ ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট’ (RAISE) প্রকল্প এর আওতায় দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে আগে নির্ধারিত ২ লাখ ৩৩ হাজার সুবিধাভোগীর পাশাপাশি আরও ১ লাখ ৭৬ হাজার তরুণকে সহায়তা দেওয়া হবে।
প্রকল্পের আওতায় অংশগ্রহণকারীরা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ কর্মসূচি, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা পাবেন। যা তাদের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের বাধা দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে উন্নত শিশু যত্ন কেন্দ্র (চাইল্ড কেয়ার) এবং জলবায়ু সহনশীল জীবিকা নির্বাহের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর গেল মার্টিন বলেন, একটি ভালো চাকরি একটি জীবন, একটি পরিবার এবং একটি সমাজকে বদলে দিতে পারে। প্রতি বছর বাংলাদেশে অনেক তরুণ শ্রমবাজারে প্রবেশ করলেও কাঙ্ক্ষিত কাজ পাচ্ছে না। এই অতিরিক্ত অর্থায়ন নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর তরুণদের, বিশেষ করে নারীদের বাজার-চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা এবং সম্পদ অর্জনে সহায়তা করবে।
প্রকল্পের টিম লিডার অনিকা রহমান বলেন, RAISE প্রকল্প ইতোমধ্যে প্রমাণ করেছে, লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা তরুণ ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জীবনে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে। নতুন এই অর্থায়নের মাধ্যমে আমরা মানসম্মত শিশু যত্নের মতো উদ্ভাবনী সমাধান যুক্ত করছি, যা নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ বাড়াতে সাহায্য করবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি শহরের বাইরে গ্রামীণ পর্যায়েও বিস্তৃত করা হবে। বিশেষ করে বাড়িতে মানসম্মত ও সাশ্রয়ী শিশু যত্ন সেবা চালুর লক্ষ্যে নারীদের প্রশিক্ষণ ও স্টার্ট-আপ অনুদান দেওয়া হবে। এটি একদিকে যেমন নারীদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য ও বিকাশে ভূমিকা রাখবে। এছাড়া নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের সংযোগ ঘটাতে জব ফেয়ার বা চাকরি মেলার আয়োজনও করা হবে।
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের ফলাফল বেশ ইতিবাচক। প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৮০ শতাংশেরও বেশি শিক্ষানবিশ কোর্স শেষ করার তিন মাসের মধ্যে কর্মসংস্থান পেয়েছেন। এ পর্যন্ত ৫০ হাজারেরও বেশি করোনা-ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা এবং ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি বিদেশ ফেরত অভিবাসীকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা হয়েছে।
এইচএ