যশোরের ৩টি আসনে ধানের শীষের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে হাইকমান্ড। এসব আসনে প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের প্রার্থী বদল করে নতুন করে ৩ জনের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন নিয়ে দলের একাংশের নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অবৈধ মনোনয়ন মানি না মানবো স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, যশোর-১ শার্শা আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রাথমিকভাবে দলীয় মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি। এরপর থেকে ভোট চেয়ে এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে আসছিলেন তিনি। বুধবার তাকে বদল করে এই আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন।
সূত্র জানায়, মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে মনোনয়ন দেয়ার পর থেকে বিপক্ষে অবস্থান করে শার্শা উপজেলা বিএনপি সভাপতি আবুল হাসান জহির,সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন ও সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা খায়রুজ্জামান মধু। এই চার নেতা মফিকুল হাসান তৃপ্তির মনোনয়ন বাতিলের দাবিকে সোচ্চার ছিলেন।
চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থী নুরুজ্জামান লিটন বলেন, দলের হাইকমান্ডের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। শার্শা উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করবেন বলে আশাবাদী। তিনি সব সময় নেতা-কর্মীদের পাশে ছিলেন,আগামীতে থাকবেন।
যশোর-৫ মণিরামপুর আসনে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বিএনপি জোটের দুইজনকে প্রাথমিক মনোনয়ন দেয়া হয়। এ নিয়ে উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত ৪ ডিসেম্বর বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়। তার প্রাথমিক মনোনয়ন বাতিল করে ২৪ ডিসেম্বর ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার-প্রচারণায় ছিলেন।
জমিয়াত ওলামায়া ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসের নাম জোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকে বিএনপির একাংশের নেতা কর্মীরা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় ‘অবৈধ মনোনয়ন মানি না-মানবো না’ শ্লোগান দেয়া হয়। তবে সন্তোষ্টি প্রকাশ করেছেন মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসের অনুসারীরা।
যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনে ধানের শীষের চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ। এর আগে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তিনি নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। দলীয় হাইকমান্ড শেষ মুহুর্তে তাকে আউট করে দিয়েছেন।
কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক স্ট্যাটাসে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মনোনয়ন পরিবর্তনে শ্রাবণ অনুসারীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
চূড়ান্ত মনোনীত প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ বলেন, হাইকমান্ড তাকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় অনেক খুশি। মানুষের ভালোবাসা ও সমর্থনে ধানের শীষ বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। বিএনপির সকল নেতাকর্মী তার পাশে থাকবেন বলে আশাবাদী।
পিএম