সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নবজাতকের গলা কেটে হত্যা করেছে জান্নাতুল ফেরদৌস (২২) নামের এক পাষণ্ড মা ও তার স্বজনরা। এরপর বাড়ির পেছনে গর্ত খুঁড়ে লাশ মাটিচাপা দেওয়ার সময় প্রতিবেশীরা দেখে ফেলেন। ফলে টয়লেটের ভেতরে নবজাতকের লাশ লুকিয়ে রেখে তারা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বাচড়া ভুতেরদিয়ার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের বাচড়া ভুতেরদিয়ার গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসের প্রায় ১ বছর আগে একই ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামের নবী মণ্ডলের ছেলে করিম মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয়। ৬ মাস সংসারের পর তাদের বনিবনা না হওয়ায় স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান জান্নাতুল ফেরদৌস।
এরপর করিম মণ্ডল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিছুদিন পর সেই স্ত্রীও পরকীয়া প্রেমিকের পরামর্শে গত ২৭ অক্টোবর করিম মণ্ডলকে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করে।
এদিকে ডিভোর্সি জান্নাতুল ফেরদৌসের গর্ভে করিমের ঔরসজাত সন্তান ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে থাকে। বিষয়টি গোপন রাখে জান্নাতুল ফেরদৌস ও তার পরিবার। বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ভোর রাতে জান্নাতুল ফেরদৌস একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন।
এরপর জান্নাতুল ফেরদৌস ও তার মা আল্পনা খাতুন মিলে সদ্যভূমিষ্ঠ নবজাত শিশুটিকে গলা কেটে হত্যার পর লাশ বাড়ির পেছনে মাটি খুঁড়ে মাটিচাপা দেওয়ার সময় প্রতিবেশীরা দেখে ফেলেন। পরে টয়লেটের মধ্যে শিশুটির লাশ লুকিয়ে রেখে বাড়ির সবাই দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে করিম মণ্ডলের মা নাজমা বেগম, বাবা নবী মণ্ডল ও বোনের জামাই রমজান আলী জানান, করিমের সঙ্গে জান্নাতুল ফেরদৌসের বিয়ের ৬ মাস পরেই ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর দ্বিতীয় বিয়ে করেন করিম মণ্ডল। বিয়ের কিছুদিন পর দ্বিতীয় স্ত্রী তার পরকীয়া প্রেমিকের পরামর্শে তাকে খাদ্যের সঙ্গে গ্যাস ট্যাবলেট খাইয়ে হত্যা করে। এখন করিমের একমাত্র স্মৃতি ছিল জান্নাতুল ফেরদৌসের গর্ভের সন্তান। সেই সন্তানকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর গলা কেটে হত্যা করে করিমের স্মৃতিটুকুও মুছে দিল পাষণ্ডরা।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নবজাতকের লাশ উদ্ধার ও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।
এনআই