এইমাত্র
  • বিদায় ২০২৫, স্বাগত ২০২৬
  • এবার এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন খালেদ সাইফুল্লাহ
  • নাহিদের বছরে আয় ৩২ লাখ টাকা
  • সব ভুলে শেখ হাসিনার মুক্তি চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া
  • খালেদা জিয়ার মৃত্যুর দায় থেকে ফ্যাসিবাদী হাসিনা মুক্তি পাবেন না: নজরুল ইসলাম খান
  • ইরানে অর্থনৈতিক স্থবিরতা নিয়ে বিক্ষোভ, সরকারি ভবনে হামলা
  • জার্মানিতে ব্যাংকের ভল্ট থেকে এক কোটি ইউরো নিয়ে পালালো চোর
  • ভারতে লাইনের পানি পানে মৃত ৫, অসুস্থ হাজারের বেশি
  • ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
  • জাতীয় সরকার গঠনের ইঙ্গিত জামায়াতের
  • আজ বৃহস্পতিবার, ১৭ পৌষ, ১৪৩২ | ১ জানুয়ারি, ২০২৬
    জাতীয়

    সব ভুলে শেখ হাসিনার মুক্তি চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া

    বিবিসি বাংলা প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
    বিবিসি বাংলা প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

    সব ভুলে শেখ হাসিনার মুক্তি চেয়েছিলেন খালেদা জিয়া

    বিবিসি বাংলা প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম

    বাংলাদেশের রাজনীতিতে চার দশকেরও বেশি সময়ের 'প্রবল প্রতিপক্ষ' হিসেবেই নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও এখনকার অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

    তবে ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই বছরের ১৬ই জুলাই শেখ হাসিনাকে চাঁদাবাজির মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হলে তার মুক্তি জানিয়ে তখন বিবৃতি দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া।

    আবার এর দু'মাস পরই দোসরা সেপ্টেম্বর একটি দুর্নীতি মামলায় মিসেস জিয়া নিজেও আটক হয়েছিলেন।

    তখন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিল্লূর রহমান 'খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার' পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে।

    শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে তখন জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার দুটি বিশেষ কারাগারে রাখা হয়েছিল। পরে ২০০৮ সালের ১১ই জুন শেখ হাসিনা এবং ১১ই সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়েছিলেন।

    এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন জোট বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল। অন্যদিকে বিরোধী দলের আসনে বসেছিলেন খালেদা জিয়া।

    কোন পরিস্থিতিতে বিবৃতি দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া?

    খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি-জামায়াতের চার দলীয় জোট সরকারের শেষ দিকে পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধ সহিংসতায় রূপ নিলে ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসেন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

    এরপর বিভিন্ন ভাবে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংস্কার ইস্যুতে মতবিরোধ চাঙ্গা হয়ে ওঠে এবং দুই দলেরই কিছু সিনিয়র নেতা নিজ নিজ দলের ভেতরে সংস্কারের দৃশ্যমান উদ্যোগ নেন।

    এমন প্রেক্ষাপটে তখন আলোচনায় আসে কথিত মাইনাস টু ফর্মুলাও। সেসময় দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথিত উদ্যোগই মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল।

    দুই দলেই এই উদ্যোগ শক্তিশালী হয়ে ওঠলে দুই নেত্রী শেষ পর্যন্ত রাজনীতি অব্যাহত রাখতে পারবেন কি-না সেই আলোচনা ক্রমশ ডালপালা মেলছিল।

    আর সে কারণেই তখনকার রাজনৈতিক অঙ্গনে দুই নেত্রীকে আটকের সম্ভাবনার বিষয়টি আগে থেকেই আলোচনা হচ্ছিলো।

    শেষ পর্যন্ত চাঁদাবাজির এক মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই সোমবার ভোরে শেখ হাসিনাকে তার ধানমণ্ডির বাসা 'সুধা সদন' থেকে গ্রেফতার করে সরাসরি আদালতে নিয়ে যায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

    কিন্তু আদালত প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনা প্রবল ভিড়ে অশোভন আচরণের শিকার হলে তা নিয়ে তুমুল প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

    এমন প্রেক্ষাপটে ১৮ই জুলাই খালেদা জিয়ার তখনকার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে শেখ হাসিনার মুক্তি দাবি করা হয়।

    বিবৃতিতে শুরুতেই মিসেস জিয়া বলেন, "শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক গ্রেফতার এবং তাকে আদালতে আনা-নেওয়ার সময় তার মর্যাদা রক্ষায় প্রশাসনিক ব্যর্থতা আমাকে বেদনাহত করেছে"।

    "একটি দলের প্রধান, একজন জাতীয় নেতার কন্যা, সাবেক একজন প্রধানমন্ত্রী, একজন প্রবীণ নারী, সর্বোপরি দেশের একজন সম্মানিত নাগরিক হিসেবে আদালত প্রাঙ্গণে তাকে যে ধরনের অসম্মানজনক ও অশোভন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে তাতে আমি গভীরভাবে মর্মাহত," বলেছেন মিসেস জিয়া।

    তিনি আরও বলেন, "আমার ধারণা, বিবেকবান নাগরিকদের অনুভূতি এতে আহত হয়েছে এবং দেশে-বিদেশে ক্ষুণ্ণ হয়েছে সরকারের ভাবমর্যাদা। সরকার আরও সতর্ক ও সচেতন থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো"।

    শেখ হাসিনার মুক্তি দাবি করে দেওয়া বিবৃতিতে খালেদা জিয়া তখন আরও বলেছিলেন যে, "শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময়ে আমাদের সরকার ও দলের সমালোচনার গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের পরিবার ও ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধেও নানান অযৌক্তিক, অরাজনৈতিক ও অসৌজন্যমূলক উক্তি করেছেন। তাতে আমি যেমন কষ্ট পেয়েছি, ঠিক একই রকম দুঃখবোধ করছি তাকে অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের শিকার হতে দেখে"।

    তিনি বলেন, "মানুষ হিসেবে আমরা কেউই ভুলভ্রান্তি ও ত্রুটিবিচ্যুতির ঊর্ধ্বে নই। সমস্যাজর্জরিত একটি দেশে যিনি যত বড় দায়িত্ব পালন করেন তার তত বেশি ভুলত্রুটির আশঙ্কা থাকে। তাছাড়া এ দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পাশাপাশি রাজনীতিকদের সাফল্যকেও খাটো করে দেখা উচিত নয়।''

    ''তবে আমরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নই। ইচ্ছাকৃত আইন ভঙ্গ এবং দেশ ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর তৎপরতায় লিপ্ত হলে সবার বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে দুটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ''।

    ''এক, অভিযুক্ত মাত্রই অপরাধী নয়। কাজেই তাদের যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা সুরক্ষা সরকার ও প্রশাসনের কর্তব্য। এবং দুই, সব অভিযুক্ত যাতে সন্দেহাতীতভাবে ন্যায়বিচার পায় এবং তাদের মানবাধিকার পুরোপুরি বজায় থাকে সেই লক্ষ্যে আত্মপক্ষ সমর্থন ও আইনগত সহায়তা লাভের সুযোগের পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা থাকতে হবে। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও আমি এ দুটি বিষয়ে নজর রাখার আহবান জানাচ্ছি।"

    বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরও বলেন, "শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার না করে কিংবা তার জামিনের আবেদনে সরকার পক্ষ থেকে বিরোধিতা না করে অর্থাৎ তাকে জেলে না পাঠিয়ে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই ভালো হতো বলে আমার ধারণা। এখনো তাকে মুক্ত রেখে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা পরিচালনার কোনো আইনসঙ্গত সুযোগ থাকলে আমি তাকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এতে পারস্পারিক অবিশ্বাস ও সন্দেহ এবং সামাজিক উত্তেজনা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসবে"।

    বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, "দেশে জরুরি অবস্থা অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও যে পরিস্থিতির কারণে তা অনিবার্য হয়ে উঠছিল, শান্তিপ্রিয় দেশবাসী সেই অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই চায় না। আবার জরুরি অবস্থার দীর্ঘস্থায়িত্বও কোনো সুফল বয়ে আনবে না''।

    ''তাই জাতীয় জীবনের এ সন্ধিক্ষণে টেকসই স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের পথ ধরে পরম কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দিকেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য প্রয়োজন বিদ্বেষ-বিভাজন পরিহার করে জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠা। আজ সে সুযোগ ও সম্ভাবনা অনেকটাই সৃষ্টি হয়েছে বলে আমি মনে করি। এ ক্ষেত্রে সবাইকে প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও সংযমের পরিচয় দিতে হবে"।

    খবর: বিবিসি বাংলা

    এফএস

    সম্পর্কিত:

    সম্পর্কিত তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি

    Loading…