বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের মিয়ারচর দাখিল মাদ্রাসায় আর্থিক অনিয়ম, ক্লাস বন্ধ রেখে ব্যক্তিগত নূরানী মাদ্রাসা পরিচালনা, সরকারি বই বিতরণে অস্বচ্ছতা, শিক্ষকের হাজিরা কারচুপিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে।
এসব অভিযোগের তদন্ত দাবি করে মাদ্রাসার এডহক কমিটির আহবায়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বুধবার (৩ ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, দাখিল মাদ্রাসার প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস তিনটি দীর্ঘদিন বন্ধ রেখে সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন মাদ্রাসার সামনে ব্যক্তিগত নূরানী মাদ্রাসা চালু করেছেন। মাদ্রাসার শিক্ষকদের ব্যবহার করে ওই তিন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নূরানী মাদ্রাসায় পাঠানো হয় এবং সেখানে বেতন নিয়ে পাঠদান করা হয়। নূরানী মাদ্রাসার আয় থেকে নিয়মিত ভাগ নেন সুপার—এমনটিও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জাহাঙ্গীর হোসেন আরও দাবি করেন, ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফি, সার্টিফিকেট প্রদানসহ বিভিন্ন খাতে রশিদবিহীন অর্থ আদায় করা হয়। সরকারি বরাদ্দের টিউশন ফি কোনোরূপ হিসাব ছাড়া সুপার এককভাবে ভোগ করছেন। ২০১৫ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তিনটি ক্লাসের সরকারি বই কোথায় ব্যবহৃত হয়েছে সে বিষয়ে জবাব দিতে পারেননি সুপার।
অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, একজন সহকারী শিক্ষিকা প্রায় দুই বছর অনুপস্থিত থাকলেও হাজিরা খাতায় উপস্থিত দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাগজপত্র ঠিক রাখছেন উক্ত মাদ্রাসার সুপার। সাবেক সভাপতির সঙ্গে যোগসাজশ করে ঘুষের বিনিময়ে চাকরি ও নাইটগার্ড নিয়োগের অভিযোগও করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল জলিল অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সরেজমিন পরিদর্শন করে নূরানী মাদ্রাসাটি অন্যত্র সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য অভিযোগও তদন্তাধীন।’
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ারচর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই পক্ষের বিরোধের বলি হচ্ছি আমি। অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। আমি যোগদানের আগেই নূরানী মাদ্রাসাটি চালু করা হয়েছিল। উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে আগামী জানুয়ারির মধ্যে নূরানী মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এসএম