যশোরের চৌগাছা উপজেলার পাশাপোল ইউনিয়নের হাওলী গ্রামে ইউপি সদস্য আলী কদর ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামবাসী।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্যে শাপলা খাতুন বলেন, ইউপি সদস্য আলী কদর গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে এলাকায় ভূমি দখল, সন্ত্রাস, অস্ত্রবাজি ও মারপিটসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। সরকার পরিবর্তনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি নিজেকে বিএনপির কর্মী পরিচয় দিয়ে আবারও আগের মতো সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আলী কদর দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি কাটার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি চৌগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাকে মাটি কাটার অপরাধে জরিমানা করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের পরিবারকে সন্দেহ করতে থাকেন।
গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে তার স্বামী আব্দুস সালাম তাদের ৭ বিঘা ধানের জমি চাষের জন্য একটি ট্রাক্টর সরকারি রাস্তা দিয়ে মাঠে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় কদরের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ওই রাস্তাকে নিজের দাবি করে বাধা দেন। একপর্যায়ে আলী কদরের নেতৃত্বে ইকবাল হোসেন, খাদেমুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম, সেকেন্দার আলী, আদম আলীসহ ৭/৮ জন আব্দুস সালামকে মারধর করে।
শাপলা খাতুন বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ধারালো দা দিয়ে তার মাথায় কোপ দেয়। একই সময়ে তার ভাইপো অমিত হাসানকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। ঘটনার সময় ৮/১০ জন গ্রামবাসী এগিয়ে এলে তাদেরও মারধর করা হয় এবং অস্ত্র দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়। ভয়ে গ্রামবাসীরা সরে গেলে হামলাকারীরা গালিগালাজ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরে আহতদের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর আব্দুস সালাম বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার এতদিন পরও একজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে শাপলা খাতুন আরও বলেন, উল্টো আলী কদর আমাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। পুলিশ ও ওই চক্রের লোকজন আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তার পরিবারের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহবুব আলম, শরিফুল ইসলাম, বাবর আলী, সোহাগ হোসেন, সোহেল রানা, সাইফুল ইসলাম, আরিফ হোসেন, জুবাইদা বেগম প্রমুখ।
পিএম