সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তকে কর্মস্থলে যোগদানে বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীন ও তার অনুসারীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অমান্য করে এই শিক্ষককে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে তাকে কর্মস্থলে যোগদানে বাধা দিয়েছেন।
গত ২৮ ডিসেম্বর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩৭.০০.০০০০.০৭১.১২.০২১.২৫-৫০১ নম্বর স্মারকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তালিকার ক্রমিক নং ১২, পিডিএস আইডি ২০১৬৭০২৯৮৫ মো. কবির হোসেন আকনকে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক (চলতি দায়িত্ব) পদে পদায়ন করা হয়। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী, কবির হোসেন আকন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীনের চেয়ে তিন দিনের সিনিয়র। বিধি মোতাবেক, কবির হোসেন আকন যোগদান করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব তার উপর বর্তাবে।
বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা জানান, মো. আলাউদ্দীন তার কিছু সহযোগী ও বহিরাগত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে লুটপাটের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অমান্য করে সিনিয়র শিক্ষকের যোগদান বাধাগ্রস্ত করছেন এবং সরকারি-বেসরকারি ফান্ড থেকে তড়িঘড়ি করে বিপুল অর্থ তছরুপ করছেন। শীতকালে ফ্যানসহ বিভিন্ন বিলও ভাউচার করা হচ্ছে। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কবির হোসেন আকন বলেন, “আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নিয়ে গত ২৯ ডিসেম্বর বিদ্যালয়ে যোগদান করতে এসেছিলাম। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে যোগদান করতে বাধা প্রদান করেছেন এবং বিভিন্নভাবে হয়রানী করেছেন। মঙ্গলবার স্কুলে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি আপনাকে যোগদান করাতে পারব না। ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলুন।’ পরে জানতে পারি, যোগদানের আগেই মো. আলাউদ্দীন পরিকল্পিতভাবে আমার চরিত্রহননের চেষ্টা চালাতে জেলা প্রশাসকের কাছে কিছু শিক্ষক ও অভিভাবকের মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন।”
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কাগজপত্রে সমস্যা থাকার কারণে কবির হোসেন আকনকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।”
সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আলমগীর কবির বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তিনি অবশ্যই বিদ্যালয়ে যোগদান করবেন। তাকে বাধা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”
জেলা প্রশাসক মিজ্ আফরোজা আখতার বলেন, “বর্তমান প্রধান শিক্ষক কয়েকজন অভিভাবককে নিয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এনআই