রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ফসলের মাঠ সরিষা ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। এখন অন্যের সরিষার ক্ষেতের পাশে ফাঁকা স্থানে মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌচাষিরা। একদিকে যেমন মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন মৌচাষিরা, অন্যদিকে ফুলের পরাগায়নে উপকার হচ্ছে ফসলের ফলে লাভবান হচ্ছে চাষিরা।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার নগর রায়ের পাড়া এলাকার সরিষা মাঠে নারায়ণগঞ্জের বারদী এলাকা থেকে পল্লব রায়সহ চারজন যুবক ১০৫টি মৌবাক্স নিয়ে এসেছে।
মৌচাষিদের মৌবাক্স গুলো থেকে হাজার হাজার ইউরোপীয়ান এপিস মেলিফেরা জাতের মৌমাছি উড়ে গিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাঠে। ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌবাক্সের ভেতরে চাকে জমা করছে মৌমাছিরা। আর কৃত্রিম পদ্ধতিতে এ সব চাক থেকে মধু সংগ্রহ করছে মৌচাষীরা।
মৌচাষি পল্লব রায় বলেন, এটি ইউরোপীয়ান এপিস মেলিফেরা জাতের মৌমাছি। বর্তমানে আমাদের এখানে ১০৫টি বক্স আছে। এখানে সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি যদি পলিনেশন করে তাহলে ৩০% সরিষার ফলন বৃদ্ধি পাবে এবং সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি থাকলে অন্যান্য পোকার আক্রমণ কম হয়।
সরিষা চাষী কলিমউদ্দিন খা বলেন, মৌচাষিরা আমাদের জমির পাশে মৌবাক্স গুলো স্থাপন করেছে। আগে শুনতাম মৌমাছি সরিষা ফুলে পড়লে ফুল নষ্ট হয় ও ফলন কম হয়। আর এখন জানি মৌমাছি ফসলের জন্য অনেক উপকারি। মৌমাছি ফুল থেকে রেণু সংগ্রহ করে এতে ফুলের পরাগায়ন হয়। এটি সরিষার জন্য খুবই উপকারি এবং ফলন বৃদ্ধি করে।
মৌচাষি আবু হাসনাত বলেন, প্রতিটি মৌবক্সে ৭ থেকে ৮টি ফ্রেম দিয়ে সাজানো রয়েছে। কয়েকদিন পর পর এই মৌবাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। এখানে আমাদের এক মাসে ৬শ কেজি মধু সংগ্রহ করার টার্গেট আছে। সরিষা ফুলের মধু ৬শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। আমারা এই মাঠে নভেম্বর মাসের শেষের দিকে এসেছি জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এই মাঠে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করবো।
উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ রায়হানুল হায়দার সময়ের কণ্ঠস্বরকে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। এ সময় মৌ চাষিরা সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌবক্স স্থাপন করে মধু আহরণ করছে। কৃষকদের বলবো মৌচাষীদের উৎসাহিত করবেন। তারা যেন মধু আহরণ করতে পারে। কারণ যেখানে মৌমাছির মৌচাষ হয় সেখানে সরিষার ফলন বৃদ্ধি পায়।
পিএম