কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ ও বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নিজস্ব অর্থায়নে মেরামত করছেন কিশোরগঞ্জ জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজানের উদ্যোগে পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ কটিয়াদি টু মঠখোলা এবং টোক-কাপাসিয়া সড়কের রাস্তায় থাকা গর্তগুলো ইটের সুরকি ও বালি দিয়ে ভরাট করা হয়। ফলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেল এই সড়ক ব্যবহারকারীরা।
এসময় রমজানের সাথে স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেন বুরুদিয়া ইউনিয়নের গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সোহাগ, যুগ্ম সদস্য সচিব আকাশ আহমেদ, ইউনিয়ন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি হৃদয় মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি স্বপন মিয়া প্রমূখ। তারা সবাই ঘাম ঝরিয়ে হাসি মুখে এই কাজ সফল করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নে মঠখোলা টু টোক কাপাসিয়া সড়কটি মেরামতের জন্য জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন স্থানীয়রা। কিন্তু কেউই বিষয়টি নজরে নেননি। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ ও বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগী ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। যাত্রীসহ কোনো গাড়ি এলে যাত্রী নামিয়ে ভাঙা রাস্তা পার হয়ে পরে যাত্রী তুলে যাতায়াত করতে হয়েছে। এ অবস্থায় সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেন জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান। তার শ্রম ও অর্থায়নে রাস্তার ভাঙা অংশ মেরামত করে চলাচল উপযোগী করে তোলা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা রবি মিয়া বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অনেক স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ হাটবাজারের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ থাকায় আমাদেরকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিলো। যুব অধিকার পরিষদের নেতা হাসান আহমেদ রমজান সাহেব নিজ অর্থায়নে সড়ক মেরামত করছেন। এতে আমরা আনন্দিত।
বুরুদিয়া ইউনিয়ন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব সোহানুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হলে তারা জানান, আপাতত কোনো বরাদ্দ নেই। যে কারণে এই মুহূর্তে রাস্তাটি মেরামতের ব্যবস্থা করা সম্ভব না। তবে রাস্তাটি নিজস্ব অর্থ-শ্রমে মেরামতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন আমাদের জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান ভাই। পরে আজ দুপুরে রমজান ভাইয়ের উদ্যোগে সড়কটি মেরামত করা হয়।’
অটোরিকশাচালক রশিদ মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়েছে। প্রতিনিয়ত ভ্যান ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পড়ে। গাড়ি চালানো তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে। হাসান আহমেদ রমজান সড়কটি মেরামত করায় আমরা অনেক ভালো করে গাড়ি নিয়ে চলাচল করতে পারবো।
স্কুল ছাত্রী আকলিমা আক্তার বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যেতে আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন যে পড়ে গিয়ে আহত হই, তা বলা যায় না। অনেক সময় বাধ্য হয়ে স্কুল মিস করতে হয়। এখন সড়কটি মেরামত হওয়ায় আমরা অনেক খুশি।
কিশোরগঞ্জ জেলা যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ রমজান বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। প্রতিদিন এ পথে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হতো। সেই বিষয়টি বিবেচনা করে আমি নিজ উদ্যোগে সড়কটি মেরামতের কাজ শুরু করেছি। মানুষের কষ্ট লাঘবে সবসময় জনগণের পাশে থাকতে চাই। আমার এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ মানবিক দায়িত্ব থেকে।
কৃষিকাজ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাজারে যাতায়াতের জন্য এই একটি সড়কের ওপর পুরো অঞ্চলের মানুষ নির্ভরশীল। সড়ক ধসে পড়ার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে বাধ্য হয়ে স্কুল–কলেজ ও উপজেলা সদরে যেতে হতো, যা অনেক সময় রোগী বা স্কুলপড়ুয়া শিশুদের জন্য হয়ে উঠেছিল বিপজ্জনক ও কষ্টকর।
এইচএ