পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্টিন বিসকারাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। দক্ষিণাঞ্চলীয় মোকুয়েগুয়া অঞ্চলের গভর্নর থাকার সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এ দণ্ড দেয়া হয়। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি সরকারি দায়িত্ব পালনে নয় বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে তাকে। দণ্ড ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ বিসকারা লিখেছেন, ‘এটি ন্যায়বিচার নয়, এটি প্রতিশোধ। তারা আমাকে ভাঙতে পারবে না।’ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, মোকুয়েগুয়ায় বিভিন্ন সরকারি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি দেয়ার বিনিময়ে বিসকারা ৬ লাখ ডলারেরও বেশি ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন। ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ওই অঞ্চলটির গভর্নর ছিলেন। এরপর ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পেরুতে সাবেক রাষ্ট্রপ্রধানদের এমন শাস্তির মুখোমুখি হওয়া অবশ্য নতুন নয়। তার আগে আরও অন্তত তিনজন সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান এমন শাস্তি পেয়েছেন। বিষয়টিকে পেরুর রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা ও দুর্নীতির প্রতিচ্ছবি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
২০১৮ সালের পর থেকে দেশটিতে ছয়জন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় এসেছেন—যাদের মধ্যে অনেকেই অভিশংসন বা দুর্নীতির কেলেঙ্কারির কারণে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন।
২০১৮ সালে পেদ্রো পাবলো কুসিনস্কি কংগ্রেস সদস্যদের ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা এবং ওদেব্রেচট দুর্নীতি কেলেঙ্কারির তদন্তের মুখে পদত্যাগ করলে বিসকারা প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। এর বছর তিনেক পর একই ঘুষ-কেলেঙ্কারি সংশ্লিষ্ট অভিযোগে কংগ্রেস তাকে পদচ্যুত করে।
বিসকারা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার অভিশংসন ও বর্তমান মামলা—উভয়ই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এক পৃথক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘মাফিয়াসুলভ জোটের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অপরাধেই আমাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তারা আমাকে পদচ্যুত করেছে। সরকারি দায়িত্ব পালনে নিষিদ্ধ করেছে। দল থেকে বহিষ্কার করেছে। আর এখন আমাকে কারাগারে পাঠাচ্ছে।
এবি